ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুস্থ থাকতে অনুসরণ করুন শ্রেষ্ঠ নবীজির আহার-পদ্ধতি

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০২২
  • 9

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সর্বশেষ নবী ও রাসুল, আল্লাহর পেয়ারা হাবিব, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) । তিনি বিশ্বের সব মানুষের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ মহামানব।

নবী (সা.) ছিলেন শ্রেষ্ঠতম মানুষ ও সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। আল্লাহ তাআলা বলেন,

لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

“তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মাঝে রয়েছে উত্তম দৃষ্টান্ত।” –সূরা আহযাব, আয়াত : ২১

অতএব, মুসলিম হিসেবে আমাদের জীবনে কাউকে অনুকরণ করতে হলে নবীজিই হলেন সেই মানুষ। তিনি একটি সফল সুন্দর জীবনের আর সবকিছুর মত খাবার গ্রহণের সুন্দরতম পদ্ধতিটিও আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। এর অনুসরণের মাঝেই রয়েছে আমাদের জন্য সুস্থতা ও কল্যাণ।

এখানে রাসূল (সা.) কীভাবে খাবার গ্রহণ করতেন, এর কিছু পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।

১. প্রয়োজনের অতিরিক্ত না খাওয়া
রাসূল (সা.) খাবার গ্রহণের জন্য পেটকে তিনভাগে ভাগ করার উপদেশ দিয়েছেন। প্রথম একভাগ খাবার, দ্বিতীয় একভাগ পানি ও তৃতীয় একভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য তিনি খালি রাখতে বলেছেন।

প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে এবং বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃষ্টি করে।

২. সকল প্রকার খাদ্যগ্রহণ
রাসূল (সা.) আমিষ ও উদ্ভিদজাত উভয় প্রকার খাবারই গ্রহণ করতেন। তিনি কখনোই শুধু আমিষ বা শুধু উদ্ভিদজাত খাদ্য খেতেন না। শরীরের সুস্থতার জন্য আমাদের উভয় প্রকার খাদ্যেরই প্রয়োজন আছে। কোন এক প্রকার খাবার অধিক গ্রহণ করে অন্যটি সম্পূর্ণ বর্জন শরীরের জন্য কোনক্রমেই উপকারী নয়।

৩. প্লেট পরিষ্কার করে খাওয়া
প্লেটে পরিবেশিত খাদ্যের শেষ কণাটি পর্যন্ত মুছে খেয়ে নেওয়া রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ। রাসূল (সা.) তার সামনে পরিবেশিত আহারের শেষ কণাটি পর্যন্ত মুছে আহার করতেন।

বর্তমানে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের মূল পুষ্টিগত নির্যাস পাত্রের তলায় এসে জমা হয়।

পাশাপাশি খাবার পর আঙ্গুল চেটে নেওয়াও সুন্নাহর অংশ। খাবার শেষে আঙ্গুল চেটে নেওয়ার মাধ্যমে হজম ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পাচক রসের অধিক নিঃসরণ ঘটে।

৪. হাত দিয়ে খাওয়া
কোন প্রকার চামচ ব্যবহার না করে সরাসরি হাত ব্যবহার করে খাওয়া রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ। এভাবে মাধ্যমে খাবারের সাথে সংযোগ স্থাপিত হয়। ফলে যত্নের সাথে পরিষ্কার করে খাবার খাওয়া সম্ভব হয় এবং তা সহজেই হজম হয়। অন্যদিকে, চামচ দিয়ে খেলে খাবারের সাথে কোন প্রকার সংযোগ ঘটে না। ফলে অনেকাংশে অবহেলায় অপরিচ্ছন্নভাবে খাবার গ্রহণ করা হয়। মনোসংযোগ ছাড়া অবহেলায় খাবার গ্রহণের কারণে এই খাবার হজমের জন্য বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়।

৫. আল্লাহর নাম নিয়ে খাবার গ্রহণ করা
খাবার গ্রহণের পূর্বে রাসূল (সা.) আমাদের আল্লাহর নাম নিতে তথা ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই পৃথিবীতে আমাদের খাবারের জন্য যা কিছু রয়েছে, তার সকল কিছুই আল্লাহর নেয়ামত। সুতরাং, ‘বিসমিল্লাহ’ বলার মাধ্যমে আমরা যেমন আমাদের সামনে পরিবেশিত খাবারের জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করি, যার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের উপর সন্তুষ্ট হন, ঠিক তেমনি আমাদের খাবারে আল্লাহ বরকত দেন, যা আমাদের জন্য কল্যাণকর হয়।

খাবার গ্রহণের সময় রাসূল (সা.) প্রদর্শিত এই পদ্ধতিগুলো মনে রেখে বাস্তবায়ন করলে আমাদের খাবার আমাদের জন্য বেশি উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।

বিজনেস আওয়ার/০৪ অক্টোবর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সুস্থ থাকতে অনুসরণ করুন শ্রেষ্ঠ নবীজির আহার-পদ্ধতি

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, সর্বশেষ নবী ও রাসুল, আল্লাহর পেয়ারা হাবিব, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) । তিনি বিশ্বের সব মানুষের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ মহামানব।

নবী (সা.) ছিলেন শ্রেষ্ঠতম মানুষ ও সমগ্র মানবজাতির জন্য অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। আল্লাহ তাআলা বলেন,

لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

“তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মাঝে রয়েছে উত্তম দৃষ্টান্ত।” –সূরা আহযাব, আয়াত : ২১

অতএব, মুসলিম হিসেবে আমাদের জীবনে কাউকে অনুকরণ করতে হলে নবীজিই হলেন সেই মানুষ। তিনি একটি সফল সুন্দর জীবনের আর সবকিছুর মত খাবার গ্রহণের সুন্দরতম পদ্ধতিটিও আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন। এর অনুসরণের মাঝেই রয়েছে আমাদের জন্য সুস্থতা ও কল্যাণ।

এখানে রাসূল (সা.) কীভাবে খাবার গ্রহণ করতেন, এর কিছু পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করা হল।

১. প্রয়োজনের অতিরিক্ত না খাওয়া
রাসূল (সা.) খাবার গ্রহণের জন্য পেটকে তিনভাগে ভাগ করার উপদেশ দিয়েছেন। প্রথম একভাগ খাবার, দ্বিতীয় একভাগ পানি ও তৃতীয় একভাগ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য তিনি খালি রাখতে বলেছেন।

প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে এবং বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃষ্টি করে।

২. সকল প্রকার খাদ্যগ্রহণ
রাসূল (সা.) আমিষ ও উদ্ভিদজাত উভয় প্রকার খাবারই গ্রহণ করতেন। তিনি কখনোই শুধু আমিষ বা শুধু উদ্ভিদজাত খাদ্য খেতেন না। শরীরের সুস্থতার জন্য আমাদের উভয় প্রকার খাদ্যেরই প্রয়োজন আছে। কোন এক প্রকার খাবার অধিক গ্রহণ করে অন্যটি সম্পূর্ণ বর্জন শরীরের জন্য কোনক্রমেই উপকারী নয়।

৩. প্লেট পরিষ্কার করে খাওয়া
প্লেটে পরিবেশিত খাদ্যের শেষ কণাটি পর্যন্ত মুছে খেয়ে নেওয়া রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ। রাসূল (সা.) তার সামনে পরিবেশিত আহারের শেষ কণাটি পর্যন্ত মুছে আহার করতেন।

বর্তমানে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের মূল পুষ্টিগত নির্যাস পাত্রের তলায় এসে জমা হয়।

পাশাপাশি খাবার পর আঙ্গুল চেটে নেওয়াও সুন্নাহর অংশ। খাবার শেষে আঙ্গুল চেটে নেওয়ার মাধ্যমে হজম ক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পাচক রসের অধিক নিঃসরণ ঘটে।

৪. হাত দিয়ে খাওয়া
কোন প্রকার চামচ ব্যবহার না করে সরাসরি হাত ব্যবহার করে খাওয়া রাসূল (সা.) এর সুন্নাহ। এভাবে মাধ্যমে খাবারের সাথে সংযোগ স্থাপিত হয়। ফলে যত্নের সাথে পরিষ্কার করে খাবার খাওয়া সম্ভব হয় এবং তা সহজেই হজম হয়। অন্যদিকে, চামচ দিয়ে খেলে খাবারের সাথে কোন প্রকার সংযোগ ঘটে না। ফলে অনেকাংশে অবহেলায় অপরিচ্ছন্নভাবে খাবার গ্রহণ করা হয়। মনোসংযোগ ছাড়া অবহেলায় খাবার গ্রহণের কারণে এই খাবার হজমের জন্য বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়।

৫. আল্লাহর নাম নিয়ে খাবার গ্রহণ করা
খাবার গ্রহণের পূর্বে রাসূল (সা.) আমাদের আল্লাহর নাম নিতে তথা ‘বিসমিল্লাহ’ বলে খাওয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই পৃথিবীতে আমাদের খাবারের জন্য যা কিছু রয়েছে, তার সকল কিছুই আল্লাহর নেয়ামত। সুতরাং, ‘বিসমিল্লাহ’ বলার মাধ্যমে আমরা যেমন আমাদের সামনে পরিবেশিত খাবারের জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করি, যার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের উপর সন্তুষ্ট হন, ঠিক তেমনি আমাদের খাবারে আল্লাহ বরকত দেন, যা আমাদের জন্য কল্যাণকর হয়।

খাবার গ্রহণের সময় রাসূল (সা.) প্রদর্শিত এই পদ্ধতিগুলো মনে রেখে বাস্তবায়ন করলে আমাদের খাবার আমাদের জন্য বেশি উপকারী হবে ইনশাআল্লাহ।

বিজনেস আওয়ার/০৪ অক্টোবর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: