ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিধবা নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ অক্টোবর ২০২২
  • 13

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: নাটোরের গুরুদাসপুরে অনৈতিক অপবাদ দিয়ে কুলসুম (৬০) নামে এক বিধবা নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দিনগত রাত সাড়ে ৮টার সময় উপজেলার পমপাথুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত কুলসুম বেগম ওই এলাকার মৃত সুরত আলীর স্ত্রী।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই নারী এবং তার জামাইকে উদ্ধার করা হয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন জানান, কুলসুম বেগমের স্বামী সুরত আলী অনেক আগে মারা গেছেন। তার চারটি মেয়ে, কোনো ছেলে সন্তান নেই। তাই মেঝো মেয়ে রফেলার বিয়ের পর থেকেই তার নিজ বাড়িতে জামাই নিয়ে বসবাস করেন।

আজ রাতে স্থানীয় লোকজন শাশুড়িকে জামাইয়ের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছেন এমন অভিযোগ এনে ওই নারীকে হেনস্থা করেছেন দুই যুবক। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং ওই নারী ও তার জামাইকে উদ্ধার করা হয়।

তবে উদ্ধারের সময় ওই নারীকে স্বাভাবিক অবস্থায় পাওয়া গেছে। গাছে বেঁধে নির্যাতন করার ঘটনা পুলিশ যাওয়ার আগে ঘটেছে বলে স্থানীয়দের মারফত ও ওই নারী এবং জামাই আবুল কাশেমের জবানবন্দিতে জানা গেছে।

এ ঘটনার সঙ্গে প্রতিবেশী আলমের ছেলে রতন ও বকুলের ছেলে উজ্জল জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ওসি বলেন, ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুলসুম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট মেয়ের বাচ্চা হওয়ার কারণে মেঝো মেয়ে রফেলাসহ অন্য মেয়েরা তাকে দেখতে হাসপাতালে যায়। বাসায় আমি ও জামাই ছিলাম। হঠাৎ সন্ধ্যার দিকে গায়ে জ্বর এলে বিষয়টি জামাইকে বলি। এ অবস্থায় জামাই বাজারে গিয়ে ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ কিনে এনে আমাকে দিতে ঘরে প্রবেশ করে।

এর কিছুক্ষণ পরেই প্রতিবেশী আলমের ছেলে রতন ও বকুলের ছেলে উজ্জল হইচই করতে থাকে। এসময় জামাইয়ের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম বলে অপবাদ দেয়। একপর্যায়ে তারা কাদা পানির মধ্যে দিয়ে টেনে জনসম্মুখে বাড়ির বাইরে নিয়ে ডাব গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং মারধর করে।

তিনি আরও বলেন, জামাইয়ের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় থাকার কথা সঠিক নয়। তারা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমি তদন্ত করে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

তবে অভিযুক্ত রতন আলী ও উজ্জল হোসেন মোবাইল ফোনে দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা জামাই-শাশুড়ি অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত রয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়েছে। তবে তাড়াহুড়া করে গাছে বেঁধে ফেলেছিলেন ঠিকই কিন্তু কোনো শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। তারা ভুল স্বীকার করে বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ঠিক করিনি।

বিজনেস আওয়ার/২৬ অক্টোবর, ২০২২/পিএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বিধবা নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ অক্টোবর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: নাটোরের গুরুদাসপুরে অনৈতিক অপবাদ দিয়ে কুলসুম (৬০) নামে এক বিধবা নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) দিনগত রাত সাড়ে ৮টার সময় উপজেলার পমপাথুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত কুলসুম বেগম ওই এলাকার মৃত সুরত আলীর স্ত্রী।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই নারী এবং তার জামাইকে উদ্ধার করা হয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন জানান, কুলসুম বেগমের স্বামী সুরত আলী অনেক আগে মারা গেছেন। তার চারটি মেয়ে, কোনো ছেলে সন্তান নেই। তাই মেঝো মেয়ে রফেলার বিয়ের পর থেকেই তার নিজ বাড়িতে জামাই নিয়ে বসবাস করেন।

আজ রাতে স্থানীয় লোকজন শাশুড়িকে জামাইয়ের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখেছেন এমন অভিযোগ এনে ওই নারীকে হেনস্থা করেছেন দুই যুবক। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং ওই নারী ও তার জামাইকে উদ্ধার করা হয়।

তবে উদ্ধারের সময় ওই নারীকে স্বাভাবিক অবস্থায় পাওয়া গেছে। গাছে বেঁধে নির্যাতন করার ঘটনা পুলিশ যাওয়ার আগে ঘটেছে বলে স্থানীয়দের মারফত ও ওই নারী এবং জামাই আবুল কাশেমের জবানবন্দিতে জানা গেছে।

এ ঘটনার সঙ্গে প্রতিবেশী আলমের ছেলে রতন ও বকুলের ছেলে উজ্জল জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ওসি বলেন, ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুলসুম অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট মেয়ের বাচ্চা হওয়ার কারণে মেঝো মেয়ে রফেলাসহ অন্য মেয়েরা তাকে দেখতে হাসপাতালে যায়। বাসায় আমি ও জামাই ছিলাম। হঠাৎ সন্ধ্যার দিকে গায়ে জ্বর এলে বিষয়টি জামাইকে বলি। এ অবস্থায় জামাই বাজারে গিয়ে ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ কিনে এনে আমাকে দিতে ঘরে প্রবেশ করে।

এর কিছুক্ষণ পরেই প্রতিবেশী আলমের ছেলে রতন ও বকুলের ছেলে উজ্জল হইচই করতে থাকে। এসময় জামাইয়ের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় ছিলাম বলে অপবাদ দেয়। একপর্যায়ে তারা কাদা পানির মধ্যে দিয়ে টেনে জনসম্মুখে বাড়ির বাইরে নিয়ে ডাব গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং মারধর করে।

তিনি আরও বলেন, জামাইয়ের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় থাকার কথা সঠিক নয়। তারা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমি তদন্ত করে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

তবে অভিযুক্ত রতন আলী ও উজ্জল হোসেন মোবাইল ফোনে দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা জামাই-শাশুড়ি অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত রয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়েছে। তবে তাড়াহুড়া করে গাছে বেঁধে ফেলেছিলেন ঠিকই কিন্তু কোনো শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। তারা ভুল স্বীকার করে বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ঠিক করিনি।

বিজনেস আওয়ার/২৬ অক্টোবর, ২০২২/পিএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: