বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : দেশের চিংড়ি ও মাছ রপ্তানি খাতের ব্যবসা ধারাবাহিকভাবে পতনে গত কয়েক বছরের ব্যবধানে এ খাতের কোম্পানির সংখ্যা ১০৫টি থেকে কমে ৪৩-এ নেমে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজার থেকে টাকা সংগ্রহ করার আগে আছিয়া সী ফুডসের ২১৩ শতাংশের মতো অস্বাভাবিক রপ্তানি বাড়ে। যাতে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বাড়ে ১৮৪%। করোনা মহামারির কারনে পুরো দুনিয়ার স্থবিরতার সময় এমন উন্নতি করা কোম্পানিটির মুনাফা তালিকাভুক্তির বছরেই অর্ধেকে নেমে এসেছে।
আছিয়া সী ফুডসের ২০১৯-২০ অর্থবছরে নিট মুনাফা হয়েছিল ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। যা শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে হয়ে যায় ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ হিসেবে মুনাফা বৃদ্ধি পায় ২ কোটি ৭২ লাখ টাকা বা ১৮৪ শতাংশ।
অর্থ উত্তোলন শেষে এই মুনাফা আবার জায়গায় ফিরে এসেছে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আছিয়ার ২০২১-২২ অর্থবছরে ডাইলুটেড শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.৬০ টাকা। এ হিসেবে অর্থবছরটিতে নিট মুনাফা হয়েছে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা। যাতে আগের অর্থবছরের তুলনায় নিট মুনাফা কমেছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ৪৭ শতাংশ।
এদিকে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের আগে ব্যবসায় আকাশচুম্বি উত্থান হওয়া আছিয়া সী ফুডস প্রথম বছরেই সবাইকে লভ্যাংশ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া যে একটি অংশ শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দেবে, তার পুরোটা মুনাফা থেকে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রিজার্ভে হাত দিতে হবে।
আরও পড়ুন….
গোল্ডেন হার্ভেস্টের টাকা উত্তোলনের আগে ব্যবসা বাড়ে, পরে কমে
আছিয়া সী ফুডসের ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ কোটি ২৪ লাখ টাকার নিট মুনাফার বিপরীতে কোম্পানিটির পর্ষদ শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের জন্য (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) ১০% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। যাতে করে শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদেরকেই দিতে হবে ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১ম বছরেই এবং শুধুমাত্র সাধারন শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে গিয়েই ৩৫ লাখ টাকার রিজার্ভ ব্যবহার করতে হবে।
এ বিষয়ে আছিয়া সী ফুডসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) স্বপন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, রপ্তানি কমে যাওয়ার কারনে মুনাফা কমে গেছে। এই রপ্তানি কমে যাওয়ার পেছনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউরোপে তৈরী অস্থিরতা প্র্রধান কারন। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে সাদা মাছ রপ্তানি নিয়ে কাজ করলেও ২০২১-২২ অর্থবছরে তা কম করতে হয়েছে।
ইস্যু ম্যানেজার এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে আসা আছিয়া সী ফুডসের শেয়ারবাজারে আসার আগে মুনাফার ন্যায় সম্পদেও ছিল অস্বাভাবিকতা। তারা আছিয়া সী ফুডসের ২০-২৫ বছর আগে নির্মাণ করা ভবনের (জমি ছাড়া) প্রতি স্কয়ার ফিট খরচ ৪ হাজার ৪৭২ টাকা করে উল্লেখ করে। যা বর্তমান বাজারের উচ্চ দরের কাঁচামাল দিয়ে নির্মাণেও লাগে না।
শেয়ারবাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করা আছিয়া সী ফুডসের বর্তমানে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬৯.৩১ শতাংশ।
বিজনেস আওয়ার/০৬ নভেম্বর, ২০২২/আরএ