ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইলন মাস্ক বিশ্বের ধনী ব্যক্তি হলেও আইনের ঊর্ধ্বে নন: যুক্তরাষ্ট্র

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ নভেম্বর ২০২২
  • 6

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্ক বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হলেও আইনের ঊর্ধ্বে নন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কিত সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) পরিচালক ডগলাস ফাররার।

টুইটার কর্তৃপক্ষ যদি এফটিসির নীতিমালা মেনে না চলে, সেক্ষেত্রে এফটিসি কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

২৭ অক্টোবর টুইটারের মালিকানা গ্রহণের পর গত দুই সপ্তাহে টুইটারে যে গণছাঁটাই চলছে, সেদিকে ইঙ্গিত করে শুক্রবার এক বিবৃতিতে ডগলাস ফাররার বলেন, ‘টুইটারে সম্প্রতি যা শুরু হয়েছে, আমরা তার খোঁজ-খবর রাখছি এবং বেশ উদ্বেগ বোধ করছি। কোনো শীর্ষ নির্বাহী বা কোম্পানি আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত কোম্পানিকে অবশ্যই আমাদের নীতিমালা মেনে চলতে হবে।’

ইলন মাস্ককে হুঁশিয়ার করে এফটিসি পরিচালক বলেন, ‘কোনো কোম্পানি যদি এফটিসির নীতিমালা মানতে না চায়, সেক্ষেত্রে ওই কোম্পানির কর্তৃপক্ষকে সঠিক পথে আনার বিভিন্ন পন্থা আমাদের কাছে মজুত আছে। আমরা সেসব ব্যবহার করতে বাধ্য হবো।’

৬ মাস ধরে নানা নাটকীয়তা শেষে ইলন মাস্ক টুইটারের মালিকানা গ্রহণের পর রীতিমতো বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরম কোম্পানিতে। মাস্ক মালিকানা গ্রহণের আগে টুইটারের কর্মীসংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৫০০; কিন্তু গত দুই সপ্তাহে এই জনবলের ৫০ শতাংশকে ছাঁটাই করেছেন তিনি।

সবার আগে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন টুইটারের শীর্ষ নির্বাহী পরাগ আগারওয়ালকে। তারপর বিভিন্ন বিভাগের কয়েক জন শীর্ষ কর্মকর্তাকেও চাকরিচ্যুত করেন মাস্ক।

তারপর গত ১৪ দিনে চাকরি ছেড়েছেন কোম্পানির শীর্ষ প্রাইভেসি কর্মকর্তা ডেমিয়েন কিয়েরান, শীর্ষ কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা ম্যারিয়েন ফোগার্টি এবং শির্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা লিয়া কিসনার।

কোম্পানির ব্যাবস্থাপনা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের এভাবে একের পর এক চাকরিচ্যুতি ও পদত্যাগের ফলে মার্কিন সরকারের নীতিমালা অমান্য করার ঝুঁকিতে রয়েছে টুইটার। ইতোমধ্যেই গত মে মাসে গ্রাহকদের তথ্য বিক্রির অভিযোগে টুইটারকে ১৫ কোটি ডলার জরিমানা দিতে হয়েছে তৎকালীণ কর্তৃপক্ষকে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালিকানা পরিবর্তন ও গণছাঁটাইয়ের জেরে অনেক কোম্পানি ও বাণিজ্য সংস্থা টুইটারে বিজ্ঞাপন দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে কর্মীদের সতর্কবার্তা দিয়ে মাস্ক বলেছেন, গ্রাহক সাবস্ক্রিপশন থেকে আয় বাড়াতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে দেউলিয়া হয়ে যাবে টুইটার।

এদিকে, কোনো পূর্বনোটিশ না দিয়ে গণছাঁটাই করায় টুইটার থেকে চাকরিচ্যুত কর্মীদের একাংশ গত ৪ নভেম্বর কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

এছাড়া টুইটার ক্রয়ে বিদেশী বিনিয়োগ ব্যবহার করায় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলার অভিযোগও উঠেছে মাস্কের বিরুদ্ধে। সৌদি রাজপরিবারের সদস্য ও ব্যবসায়ী আলওয়ালিদ বিন তালাল টুইটার কেনায় মাস্ককে ১৮৯ কোটি ডলার দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। টুইটারের অন্যতম শেয়ারহোল্ডারও তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে টুইটারের যাবতীয় বিদেশি বিনিয়োগ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

বিজনেস আওয়ার/১১ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ইলন মাস্ক বিশ্বের ধনী ব্যক্তি হলেও আইনের ঊর্ধ্বে নন: যুক্তরাষ্ট্র

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ নভেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারের নতুন মালিক ইলন মাস্ক বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হলেও আইনের ঊর্ধ্বে নন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্কিত সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) পরিচালক ডগলাস ফাররার।

টুইটার কর্তৃপক্ষ যদি এফটিসির নীতিমালা মেনে না চলে, সেক্ষেত্রে এফটিসি কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

২৭ অক্টোবর টুইটারের মালিকানা গ্রহণের পর গত দুই সপ্তাহে টুইটারে যে গণছাঁটাই চলছে, সেদিকে ইঙ্গিত করে শুক্রবার এক বিবৃতিতে ডগলাস ফাররার বলেন, ‘টুইটারে সম্প্রতি যা শুরু হয়েছে, আমরা তার খোঁজ-খবর রাখছি এবং বেশ উদ্বেগ বোধ করছি। কোনো শীর্ষ নির্বাহী বা কোম্পানি আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত কোম্পানিকে অবশ্যই আমাদের নীতিমালা মেনে চলতে হবে।’

ইলন মাস্ককে হুঁশিয়ার করে এফটিসি পরিচালক বলেন, ‘কোনো কোম্পানি যদি এফটিসির নীতিমালা মানতে না চায়, সেক্ষেত্রে ওই কোম্পানির কর্তৃপক্ষকে সঠিক পথে আনার বিভিন্ন পন্থা আমাদের কাছে মজুত আছে। আমরা সেসব ব্যবহার করতে বাধ্য হবো।’

৬ মাস ধরে নানা নাটকীয়তা শেষে ইলন মাস্ক টুইটারের মালিকানা গ্রহণের পর রীতিমতো বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে বিশ্বের প্রথম সারির এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফরম কোম্পানিতে। মাস্ক মালিকানা গ্রহণের আগে টুইটারের কর্মীসংখ্যা ছিল ৭ হাজার ৫০০; কিন্তু গত দুই সপ্তাহে এই জনবলের ৫০ শতাংশকে ছাঁটাই করেছেন তিনি।

সবার আগে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন টুইটারের শীর্ষ নির্বাহী পরাগ আগারওয়ালকে। তারপর বিভিন্ন বিভাগের কয়েক জন শীর্ষ কর্মকর্তাকেও চাকরিচ্যুত করেন মাস্ক।

তারপর গত ১৪ দিনে চাকরি ছেড়েছেন কোম্পানির শীর্ষ প্রাইভেসি কর্মকর্তা ডেমিয়েন কিয়েরান, শীর্ষ কমপ্লায়েন্স কর্মকর্তা ম্যারিয়েন ফোগার্টি এবং শির্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা লিয়া কিসনার।

কোম্পানির ব্যাবস্থাপনা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের এভাবে একের পর এক চাকরিচ্যুতি ও পদত্যাগের ফলে মার্কিন সরকারের নীতিমালা অমান্য করার ঝুঁকিতে রয়েছে টুইটার। ইতোমধ্যেই গত মে মাসে গ্রাহকদের তথ্য বিক্রির অভিযোগে টুইটারকে ১৫ কোটি ডলার জরিমানা দিতে হয়েছে তৎকালীণ কর্তৃপক্ষকে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালিকানা পরিবর্তন ও গণছাঁটাইয়ের জেরে অনেক কোম্পানি ও বাণিজ্য সংস্থা টুইটারে বিজ্ঞাপন দেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে কর্মীদের সতর্কবার্তা দিয়ে মাস্ক বলেছেন, গ্রাহক সাবস্ক্রিপশন থেকে আয় বাড়াতে না পারলে অদূর ভবিষ্যতে দেউলিয়া হয়ে যাবে টুইটার।

এদিকে, কোনো পূর্বনোটিশ না দিয়ে গণছাঁটাই করায় টুইটার থেকে চাকরিচ্যুত কর্মীদের একাংশ গত ৪ নভেম্বর কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

এছাড়া টুইটার ক্রয়ে বিদেশী বিনিয়োগ ব্যবহার করায় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলার অভিযোগও উঠেছে মাস্কের বিরুদ্ধে। সৌদি রাজপরিবারের সদস্য ও ব্যবসায়ী আলওয়ালিদ বিন তালাল টুইটার কেনায় মাস্ককে ১৮৯ কোটি ডলার দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। টুইটারের অন্যতম শেয়ারহোল্ডারও তিনি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে টুইটারের যাবতীয় বিদেশি বিনিয়োগ খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

বিজনেস আওয়ার/১১ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: