ঢাকা , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্রাটের সহযোগী যুবলীগ নেতা জাকিরের সম্পদ বাজেয়াপ্ত-জেল

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২২
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ইসমাইল হোসেন সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবলীগের সাবেক নেতা জাকির হোসেনকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে তিন বছরের সাজা দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে অবৈধ সম্পদ হিসাবে থাকা ব্যাংকে থাকা পাঁচটি এফডিআরে থাকা ৫ কোটি ৬ লাখ টাকার বেশি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

দুই পক্ষে শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলাম ওই রায় দেন।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত জাকির হোসেন তিন বছরের সাজা দেওয়ার পাশাপাশি তার এফডিআরে থাকা অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করেছে। এছাড়া এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেছে, অনাদায়ে ৬ মাসের সাজার রায় ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ চার্জশিট অনুমোদন দেওয়ার কিছুদিন পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। চার্জশিটে তার বিরুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

জাকির হোসেনের নামে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর দুদক মামলা করে।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, অনুসন্ধানের সময় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে পাওয়া তথ্যমতে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে চলতি, সঞ্চয়ী ও এফডিআর হিসেবে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৮ হাজার টাকা জমা রয়েছে। তদন্তে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। এছাড়া রাজধানীর তিন স্থানে তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে সম্পদের মধ্যে। যদিও গত করবর্ষে (২০১৮-১৯) তিনি তার আয়কর নথিতে ৮৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। সব মিলিয়ে সর্বমোট প্রায় ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা অর্জনের সুনির্দিষ্ট কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।

জাকির হোসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৪ সালে বাস্তুহারা জাকিরের পরিবার বরিশাল ছেড়ে ঢাকায় চলে আসে। ঢাকায় তাদের ঠিকানা হয় ডেমরার চনপাড়া বস্তি। ওই বস্তিতে বেড়ে ওঠেন জাকির।

১৯৯১ সালের দিকে জাকির কাকরাইল এলাকায় পায়েল নামে একটি রেস্টুরেন্টে দৈনিক ৩০ টাকা বেতনে গ্লাস বয়ের কাজ নেন। এক বছর পর গ্লাস বয়ের কাজ ছেড়ে মাসে দুই হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন কাকরাইলের ফরিদপুর ম্যানসনের তৃতীয় তলায় ‘টনি ফিল্ম’ প্রতিষ্ঠানের পিয়ন হিসেবে। ওই সময় আওয়ামী লীগ ঘরানার নেতাকর্মীদের নিয়মিত আড্ডা ছিল কাকরাইলের ফরিদপুর ম্যানসনের নিচে ‘হোটেল ম্যারাডোনা’কে কেন্দ্র করে। সেখানেই ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সঙ্গে পরিচয় হয় জাকিরের। এরপর তারা ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন। সম্রাট যাদের দিয়ে ক্যাসিনো ব্যবসা চালাতেন তাদের মধ্যে জাকির অন্যতম।

এছাড়া জাকিরের স্ত্রী আয়েশা আক্তার সুমা ওরফে সোমার বিরুদ্ধে ৫ কোটি ১১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে। যা এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

বিজনেস আওয়ার/০৪ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সম্রাটের সহযোগী যুবলীগ নেতা জাকিরের সম্পদ বাজেয়াপ্ত-জেল

পোস্ট হয়েছে : ০৯:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ইসমাইল হোসেন সম্রাটের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবলীগের সাবেক নেতা জাকির হোসেনকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে তিন বছরের সাজা দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে অবৈধ সম্পদ হিসাবে থাকা ব্যাংকে থাকা পাঁচটি এফডিআরে থাকা ৫ কোটি ৬ লাখ টাকার বেশি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

দুই পক্ষে শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক নজরুল ইসলাম ওই রায় দেন।

রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত জাকির হোসেন তিন বছরের সাজা দেওয়ার পাশাপাশি তার এফডিআরে থাকা অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করেছে। এছাড়া এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করেছে, অনাদায়ে ৬ মাসের সাজার রায় ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ চার্জশিট অনুমোদন দেওয়ার কিছুদিন পর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। চার্জশিটে তার বিরুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

জাকির হোসেনের নামে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর দুদক মামলা করে।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, অনুসন্ধানের সময় বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে পাওয়া তথ্যমতে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে চলতি, সঞ্চয়ী ও এফডিআর হিসেবে ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৮ হাজার টাকা জমা রয়েছে। তদন্তে যার পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। এছাড়া রাজধানীর তিন স্থানে তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে সম্পদের মধ্যে। যদিও গত করবর্ষে (২০১৮-১৯) তিনি তার আয়কর নথিতে ৮৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। সব মিলিয়ে সর্বমোট প্রায় ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা অর্জনের সুনির্দিষ্ট কোনো উৎস পাওয়া যায়নি।

জাকির হোসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৪ সালে বাস্তুহারা জাকিরের পরিবার বরিশাল ছেড়ে ঢাকায় চলে আসে। ঢাকায় তাদের ঠিকানা হয় ডেমরার চনপাড়া বস্তি। ওই বস্তিতে বেড়ে ওঠেন জাকির।

১৯৯১ সালের দিকে জাকির কাকরাইল এলাকায় পায়েল নামে একটি রেস্টুরেন্টে দৈনিক ৩০ টাকা বেতনে গ্লাস বয়ের কাজ নেন। এক বছর পর গ্লাস বয়ের কাজ ছেড়ে মাসে দুই হাজার টাকা বেতনে চাকরি নেন কাকরাইলের ফরিদপুর ম্যানসনের তৃতীয় তলায় ‘টনি ফিল্ম’ প্রতিষ্ঠানের পিয়ন হিসেবে। ওই সময় আওয়ামী লীগ ঘরানার নেতাকর্মীদের নিয়মিত আড্ডা ছিল কাকরাইলের ফরিদপুর ম্যানসনের নিচে ‘হোটেল ম্যারাডোনা’কে কেন্দ্র করে। সেখানেই ইসমাইল হোসেন সম্রাটের সঙ্গে পরিচয় হয় জাকিরের। এরপর তারা ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠেন। সম্রাট যাদের দিয়ে ক্যাসিনো ব্যবসা চালাতেন তাদের মধ্যে জাকির অন্যতম।

এছাড়া জাকিরের স্ত্রী আয়েশা আক্তার সুমা ওরফে সোমার বিরুদ্ধে ৫ কোটি ১১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে। যা এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

বিজনেস আওয়ার/০৪ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: