ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাঠে খোলামেলা পোশাকে এসে বিপাকে মিস ক্রোয়েশিয়া!

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২
  • 4

বিনোদন ডেস্ক: কাতারের মুসলমানদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফার পক্ষ থেকে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দল ও তাদের সমর্থকদের শালীনতা বজায় রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু সেই শালীনতা অমান্য করে প্রকাশ্যে এসেছেন খোলামেলা পোশাক পরে মিস ক্রোয়েশিয়া- ইভানা নোল। স্টেডিয়ামে সেই পোশাকে হাজির হয়েছেন তিনি।

অনেকেই বলেছেন, তিনি কাতারে পোশাকের শালীনতার প্রতি অসম্মান দেখিয়েছেন। আলোচনা-সমালোচনা বা শাস্তির হুমকি থাকলেও তিনি পোশাকের রীতি পরিবর্তন করেননি। তবে এ নিয়ম ভঙ্গে এবং বিশ্বে আলোড়ন ঘটায় তাকে স্থির করতে এবার তৎপর হয়েছে কাতার কর্তৃপক্ষ। আর ঘটনাটি ঘটেছে (৯ ডিসেম্বর) ক্রোয়েশিয়া বনাম ব্রাজিলের হাই ভোল্টেজ ম্যাচের দিনেই।

এ দিন স্টেডিয়ামে স্বল্পবসন নিয়ে বেশ বিপাকে পরেন সাবেক মিস ক্রোয়েশিয়া। স্টেডিয়ামে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে বাধা দেন, এমনকি ভক্তদের সঙ্গে ছবি তুলতেও দেওয়া হয়নি।

এজন্য এখন মাঠের বাইরেই তিনি ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন আবার কখনও ঘুরে বেড়াচ্ছেন মাঠের বাইরে কাতার শহরে। স্টেডিয়ামের ভেতরের কাণ্ডে তিনি বেশ বিরক্ত।

এ প্রসঙ্গে ইভানা নোল বলেন, প্রথমে আমি ভেবেছি বিশ্বকাপটা যদি কাতারেই হয়, তাহলে কোনোরকম বাধা-বিপত্তি ছাড়াই সব ভক্তকে তাদের ইচ্ছেমতো সবকিছু করতে দেওয়া উচিত। এটাই স্বস্তির কথা হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারপরই জেনেছি ওইসব নিয়মকানুনের কথা। এটা জেনে আমি হতাশ। যে ড্রেসকোড দেওয়া হয়েছে, তার অধীনে নারীদের কাঁধ ঢাকা থাকতে হবে। বুকের ভাঁজ দেখানো যাবে না। হাঁটু ঢাকা থাকতে হবে। পেট ঢাকা থাকতে হবে। সবকিছু ঢাকা থাকতে হবে। তারপরই দেখলাম আমি তো এসব রীতি অনুসরণ করে এমন কোনো পোশাকও আনিনি।

তিনি আরও বলেন, আমি মুসলিম নই। তবে ইউরোপে আমরা যদি হিজাব এবং নিকাবের প্রতি সম্মান দেখাই তাহলে কেন আমাদের পোশাকের প্রতি সম্মান দেখানো হবে না। এটা নিয়ে আমি ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছি। আমার মনে হয়, তাদের উচিত আমাদের জীবনধারা, আমাদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো। আমরা পরি যেসব পোশাক তার মধ্যে আছে বিকিনি। কারণ, আমি একজন ক্রোয়েশিয়ান ক্যাথলিক। আমার দেশ বিশ্বকাপে খেলছে কিন্তু আমি যখন কাতারে পৌঁছালাম, বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম এখানে পোশাক নিয়ে তারা কোনো সমস্যা করছে না। আপনার যা পছন্দ তেমন পোশাকই পরতে অনুমতি দিচ্ছে। এতে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শুধু সরকারি অফিসগুলো। সব মিলিয়ে এটাকে একটি ভালো বিবেচনা বলতে হয়।

ইভানা নোলের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাকে রগরগে পোশাক পরার কারণে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এতে তিনি ভয়ে আছেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, এমন কোনোকিছু নিয়ে আমি কখনোই ভীত নই।

এখন অনেক ভক্তের মনে প্রশ্ন জেগেছে তাহলে সেমি-ফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হতে যাচ্চে ক্রোয়েশিয়া। সেদিনও কি তিনি এভাবেই স্টেডিয়ামে প্রবশে করতে পারবেন? নাকি পারবেন না। এর উত্তর জানা যাবে মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে।

প্রসঙ্গত, সাধারণত বিশ্বকাপ ফুটবলে আবেদনময়ী, বিশেষ করে যৌন আবেদনময়ী, নিষিদ্ধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত যুবতীদের রমরমা অবস্থা থাকে। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপ চলছে রক্ষণশীল কাতারে। সেখানে নগ্নতা, মদ, অসামাজিকতা নিষিদ্ধ করা হয়।

নারীদেরকে মর্যাদা রক্ষা করে পোশাক পরতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ইংল্যান্ডসহ সব দেশের খেলোয়াড়দের স্ত্রী অথবা প্রেমিকা কাতারে রয়েছেন শালীন পোশাকে। কীভাবে এমন পোশাক পরতে হয়, কী ধরনের পোশাক পরলে শালীনতা রক্ষা হয়, এ জন্য তারা বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন।

কিন্তু কোনো বিধিনিষেধের ধার ধারেননি ইভানা নোল। তিনি খোলামেলা পোশাকে উপস্থিত হয়ে ফুটবল ভক্তদের, বিশেষ করে পশ্চিমা ফুটবল ভক্তদের হৃদয় কেড়ে নিয়েছেন। তারাই তাকে এবার বিশ্বকাপের সবচেয়ে ‘সেক্সিস্ট ফ্যান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিজনেস আওয়ার/১২ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

মাঠে খোলামেলা পোশাকে এসে বিপাকে মিস ক্রোয়েশিয়া!

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২

বিনোদন ডেস্ক: কাতারের মুসলমানদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফার পক্ষ থেকে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দল ও তাদের সমর্থকদের শালীনতা বজায় রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু সেই শালীনতা অমান্য করে প্রকাশ্যে এসেছেন খোলামেলা পোশাক পরে মিস ক্রোয়েশিয়া- ইভানা নোল। স্টেডিয়ামে সেই পোশাকে হাজির হয়েছেন তিনি।

অনেকেই বলেছেন, তিনি কাতারে পোশাকের শালীনতার প্রতি অসম্মান দেখিয়েছেন। আলোচনা-সমালোচনা বা শাস্তির হুমকি থাকলেও তিনি পোশাকের রীতি পরিবর্তন করেননি। তবে এ নিয়ম ভঙ্গে এবং বিশ্বে আলোড়ন ঘটায় তাকে স্থির করতে এবার তৎপর হয়েছে কাতার কর্তৃপক্ষ। আর ঘটনাটি ঘটেছে (৯ ডিসেম্বর) ক্রোয়েশিয়া বনাম ব্রাজিলের হাই ভোল্টেজ ম্যাচের দিনেই।

এ দিন স্টেডিয়ামে স্বল্পবসন নিয়ে বেশ বিপাকে পরেন সাবেক মিস ক্রোয়েশিয়া। স্টেডিয়ামে নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে বাধা দেন, এমনকি ভক্তদের সঙ্গে ছবি তুলতেও দেওয়া হয়নি।

এজন্য এখন মাঠের বাইরেই তিনি ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন আবার কখনও ঘুরে বেড়াচ্ছেন মাঠের বাইরে কাতার শহরে। স্টেডিয়ামের ভেতরের কাণ্ডে তিনি বেশ বিরক্ত।

এ প্রসঙ্গে ইভানা নোল বলেন, প্রথমে আমি ভেবেছি বিশ্বকাপটা যদি কাতারেই হয়, তাহলে কোনোরকম বাধা-বিপত্তি ছাড়াই সব ভক্তকে তাদের ইচ্ছেমতো সবকিছু করতে দেওয়া উচিত। এটাই স্বস্তির কথা হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারপরই জেনেছি ওইসব নিয়মকানুনের কথা। এটা জেনে আমি হতাশ। যে ড্রেসকোড দেওয়া হয়েছে, তার অধীনে নারীদের কাঁধ ঢাকা থাকতে হবে। বুকের ভাঁজ দেখানো যাবে না। হাঁটু ঢাকা থাকতে হবে। পেট ঢাকা থাকতে হবে। সবকিছু ঢাকা থাকতে হবে। তারপরই দেখলাম আমি তো এসব রীতি অনুসরণ করে এমন কোনো পোশাকও আনিনি।

তিনি আরও বলেন, আমি মুসলিম নই। তবে ইউরোপে আমরা যদি হিজাব এবং নিকাবের প্রতি সম্মান দেখাই তাহলে কেন আমাদের পোশাকের প্রতি সম্মান দেখানো হবে না। এটা নিয়ে আমি ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছি। আমার মনে হয়, তাদের উচিত আমাদের জীবনধারা, আমাদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো। আমরা পরি যেসব পোশাক তার মধ্যে আছে বিকিনি। কারণ, আমি একজন ক্রোয়েশিয়ান ক্যাথলিক। আমার দেশ বিশ্বকাপে খেলছে কিন্তু আমি যখন কাতারে পৌঁছালাম, বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম এখানে পোশাক নিয়ে তারা কোনো সমস্যা করছে না। আপনার যা পছন্দ তেমন পোশাকই পরতে অনুমতি দিচ্ছে। এতে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম শুধু সরকারি অফিসগুলো। সব মিলিয়ে এটাকে একটি ভালো বিবেচনা বলতে হয়।

ইভানা নোলের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাকে রগরগে পোশাক পরার কারণে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এতে তিনি ভয়ে আছেন কি না। জবাবে তিনি বলেন, এমন কোনোকিছু নিয়ে আমি কখনোই ভীত নই।

এখন অনেক ভক্তের মনে প্রশ্ন জেগেছে তাহলে সেমি-ফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হতে যাচ্চে ক্রোয়েশিয়া। সেদিনও কি তিনি এভাবেই স্টেডিয়ামে প্রবশে করতে পারবেন? নাকি পারবেন না। এর উত্তর জানা যাবে মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে।

প্রসঙ্গত, সাধারণত বিশ্বকাপ ফুটবলে আবেদনময়ী, বিশেষ করে যৌন আবেদনময়ী, নিষিদ্ধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত যুবতীদের রমরমা অবস্থা থাকে। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপ চলছে রক্ষণশীল কাতারে। সেখানে নগ্নতা, মদ, অসামাজিকতা নিষিদ্ধ করা হয়।

নারীদেরকে মর্যাদা রক্ষা করে পোশাক পরতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ইংল্যান্ডসহ সব দেশের খেলোয়াড়দের স্ত্রী অথবা প্রেমিকা কাতারে রয়েছেন শালীন পোশাকে। কীভাবে এমন পোশাক পরতে হয়, কী ধরনের পোশাক পরলে শালীনতা রক্ষা হয়, এ জন্য তারা বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়েছেন বা নিচ্ছেন।

কিন্তু কোনো বিধিনিষেধের ধার ধারেননি ইভানা নোল। তিনি খোলামেলা পোশাকে উপস্থিত হয়ে ফুটবল ভক্তদের, বিশেষ করে পশ্চিমা ফুটবল ভক্তদের হৃদয় কেড়ে নিয়েছেন। তারাই তাকে এবার বিশ্বকাপের সবচেয়ে ‘সেক্সিস্ট ফ্যান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিজনেস আওয়ার/১২ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: