ঢাকা , রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৫ কোটি টাকার চুক্তিতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ছোট ভাইকে হত্যা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২
  • 5

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাই সুলতানকে হত্যা করতে দাঁত ভাঙা পলাশের সঙ্গে পাঁচ কোটি টাকা ও এক বিঘা জমির বিনিময়ে চুক্তি করেন বড় ভাই মমতাজ উদ্দিন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে ছয় ভাড়াটে সন্ত্রাসী মুখোশ পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ছোট ভাই সুলতানসহ একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করে।

এ ঘটনায় একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীসহ চারজনকে হত্যা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী দাঁত ভাঙা পলাশকে (৪১) সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধে ছোট ভাইকে হত্যা করতে পাঁচ কোটি টাকা ও এক বিঘা জমির বিনিময়ে সন্ত্রাসী পলাশের সঙ্গে চুক্তি করেন বড় ভাই মমতাজ। এরপর পলাশের নেতৃত্বে নজরুল ওরফে মনজু, আমির, জাকির, জালাল ওরফে পলাশ, হাসমত ও মমতাজ মিলে ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি গভীর রাতে মমতাজের বাড়িতে বসে সুলতানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জানুয়ারি রাতে পলাশসহ ছয় ভাড়াটে সন্ত্রাসী মুখোশ পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সুলতানকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে, শব্দে তার স্ত্রী হাজেরা বেগম চলে এলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় পাশের ঘরে থাকা দুই নাতনি রুমানা ও আনিকা এগিয়ে এলে তাদেরও হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

পরে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত সুলতানের ছেলে হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ভূরুঙ্গামারী থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় কিছুদিন পর ভূরুঙ্গামারীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্য একটি হত্যা মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে সপরিবারে সুলতান হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে। এরপর একে একে আসামিদের গ্রেফতার করা হলেও আত্মগোপনে চলে যায় দাঁতভাঙা পলাশ। তার বিরুদ্ধে মোট ১১টি মামলা রয়েছে।

এ ঘটনায় তদন্ত শেষে মমতাজ উদ্দিন, পলাশ গাজী ওরফে জালাল গাজীসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে বিচারিক আদালত ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পলাতক আসামি দাঁতভাঙা পলাশসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং অন্য একজনকে খালাস দেওয়া হয়।

এছাড়া ২০১৫ সালের জুলাই মাসে বগুড়ার শেরপুরের মির্জাপুর এলাকায় চুরির উদ্দেশ্যে মাইক্রোবাসচালক নুরুল হককে হত্যা করে পলাশ গাজী ও তার সহযোগীরা। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চলতি বছরের নভেম্বরে আদালত পলাশসহ ৯ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

বিজনেস আওয়ার/২৭ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

৫ কোটি টাকার চুক্তিতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে ছোট ভাইকে হত্যা

পোস্ট হয়েছে : ০৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাই সুলতানকে হত্যা করতে দাঁত ভাঙা পলাশের সঙ্গে পাঁচ কোটি টাকা ও এক বিঘা জমির বিনিময়ে চুক্তি করেন বড় ভাই মমতাজ উদ্দিন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে ছয় ভাড়াটে সন্ত্রাসী মুখোশ পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ছোট ভাই সুলতানসহ একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যা করে।

এ ঘটনায় একই পরিবারের স্বামী-স্ত্রীসহ চারজনকে হত্যা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী দাঁত ভাঙা পলাশকে (৪১) সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জমি নিয়ে বিরোধে ছোট ভাইকে হত্যা করতে পাঁচ কোটি টাকা ও এক বিঘা জমির বিনিময়ে সন্ত্রাসী পলাশের সঙ্গে চুক্তি করেন বড় ভাই মমতাজ। এরপর পলাশের নেতৃত্বে নজরুল ওরফে মনজু, আমির, জাকির, জালাল ওরফে পলাশ, হাসমত ও মমতাজ মিলে ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি গভীর রাতে মমতাজের বাড়িতে বসে সুলতানকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ জানুয়ারি রাতে পলাশসহ ছয় ভাড়াটে সন্ত্রাসী মুখোশ পরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সুলতানকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে, শব্দে তার স্ত্রী হাজেরা বেগম চলে এলে তাকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় পাশের ঘরে থাকা দুই নাতনি রুমানা ও আনিকা এগিয়ে এলে তাদেরও হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

পরে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নিহত সুলতানের ছেলে হাফিজুর রহমান বাদী হয়ে ভূরুঙ্গামারী থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ ঘটনায় কিছুদিন পর ভূরুঙ্গামারীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অন্য একটি হত্যা মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে সপরিবারে সুলতান হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে। এরপর একে একে আসামিদের গ্রেফতার করা হলেও আত্মগোপনে চলে যায় দাঁতভাঙা পলাশ। তার বিরুদ্ধে মোট ১১টি মামলা রয়েছে।

এ ঘটনায় তদন্ত শেষে মমতাজ উদ্দিন, পলাশ গাজী ওরফে জালাল গাজীসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে বিচারিক আদালত ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পলাতক আসামি দাঁতভাঙা পলাশসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং অন্য একজনকে খালাস দেওয়া হয়।

এছাড়া ২০১৫ সালের জুলাই মাসে বগুড়ার শেরপুরের মির্জাপুর এলাকায় চুরির উদ্দেশ্যে মাইক্রোবাসচালক নুরুল হককে হত্যা করে পলাশ গাজী ও তার সহযোগীরা। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চলতি বছরের নভেম্বরে আদালত পলাশসহ ৯ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন।

বিজনেস আওয়ার/২৭ ডিসেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: