ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শর্তসাপেক্ষে ভারতীয় ছবি আমদানিতে সম্মতি

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • 4

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শর্তসাপেক্ষে দেশে ভারতীয় ছবি আমদানিতে সম্মতি দিয়েছে ‘সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ’। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের ব্যানারে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনার বিষয়ে লিখিতভাবে জানান।

তথ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এসব শর্ত বা দাবির বিষয়ে তিনি আলাপ করবেন। আপনারা সবাই একমত হয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু শর্তসাপেক্ষে ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির ব্যাপারে একমত হয়েছেন। অতীতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার কাছে দাবি করা হয়েছিল ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানি করার জন্য৷ এটা আমি বারবার বলে এসেছি যে, সব সমিতি যদি একমত হয় (তাহলে বাস্তবায়ন সম্ভব), না হলে সেক্ষেত্রে আমরা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারব না।

এক্ষেত্রে লিখিত প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান আপদকালীন সময়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র দর্শকদের হলে ফিরিয়ে আনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণ সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিম্নলিখিত শর্তাবলী সাপেক্ষে বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি করা যেতে পারে।

শর্তাবলী-

শুধুমাত্র বাংলাদেশের বৈধ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশকরা বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি করার সুযোগ পাবেন।

বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র পরীক্ষামূলকভাবে শুধুমাত্র ২ বছরের জন্য আমদানি করার সুযোগ থাকবে।

বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি করার বিষয়ে সরকারি অনুমতি পাওয়ার পর প্রথম বছর ১০টি ও পরবর্তী বছর ৮টি চলচ্চিত্র আমদানি করতে পারবে। এখানে উল্লেখ থাকে যে, সব প্রেক্ষাগৃহ প্রতিবছর ৫২ সপ্তাহের মধ্যে ২০ (বিশ) সপ্তাহ আমদানি করা চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে পারবে।

আমদানি করা বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র মুক্তিকালীন অবশ্যই আমাদের বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। পাশাপাশি আমদানি করা চলচ্চিত্রের সঙ্গে বাজারে টিকে থাকার জন্য আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সরবোর্ডকে নমনীয় হতে হবে।

বাংলাদেশে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ উল আযহা ও দুর্গা পূজার সপ্তাহে বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) কোনও চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা যাবে না।

আমদানি করা বিদেশি ছবি (উপমহাদেশীয় ভাষার) আমদানি করার আগে অথবা অনুমতি পাওয়ার পর প্রতিটি চলচ্চিত্রের জন্য আমদানিকারক সংস্থা নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুদান (আলোচনা ও শর্ত সাপেক্ষে) সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের তহবিলে জমা দিতে হবে। উল্লেখিত অনুদান চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট স্ব স্ব সংগঠনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও কল্যাণের ব্যয়ে ব্যবহৃত হবে। এখানে উল্লেখ থাকে যে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে।

শর্ত সাপেক্ষে বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আদমানির জন্য আবেদনকালীন আবেদন পত্রের সঙ্গে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের ছাড়পত্র সংযুক্ত থাকতে হবে।

বিদেশি চলচ্চিত্র (উপমহাদেশীয় ভাষার) আমদানি করার পাশাপাশি দেশীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে আগ্রহী করার নিমিত্তে বাংলাদেশের বন্ধ হয়ে থাকা প্রেক্ষাগৃহকে আধুনিকায়ন করে চালু করা ও নতুন প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের জন্য চলচ্চিত্রবান্ধব প্রধানমন্ত্রী যে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন সেই তহবিল থেকে পর্যায়ক্রমে শুধু মাত্র ২০০ কোটি টাকা বিএফডিসির মাধ্যমে নির্মাণ ক্ষেত্রে বরাদ্দ করা যেতে পারে, তাতে করে প্রযোজক পরিবেশকরা নতুন উদ্যোমে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বিএফডিসিও বাণিজ্যিকভাবে আয় ক্ষমতা বাড়াতে পারে।

আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রতি চলচ্চিত্র দর্শকদের আরও আকৃষ্ট করার জন্য কাহিনী ও চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে এবং আমাদের প্রযোজকদের অর্থ বিনিয়োগ কমানোর লক্ষ্যে বর্তমান “যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা” রোহিত করে আমাদের পূর্বেকার “যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা” পুরনরায় চালু করতে হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে প্রযোজক ও দর্শকদের চাহিদা মতো শিল্পী সংখ্যার ঘাটতি হয়ে যাওয়াতে ছবি নির্মাণ করারও বাণিজ্যিকভাবে হুমকীর কারণ। সেই লক্ষ্যে আমরা মনে করি বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ১৯৮৬ সালের মতো ‘নতুন মুখের সন্ধানে’র নামে একটি প্রকল্প চালু করে সারা বাংলাদেশ থেকে বাচাই করে শিল্পী সংগ্রহ করতে পারি। যার ফলে আমরা শিল্পী সংকট থেকেও মুক্তি পেতে পারি।

বিজনেস আওয়ার/১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শর্তসাপেক্ষে ভারতীয় ছবি আমদানিতে সম্মতি

পোস্ট হয়েছে : ০৪:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শর্তসাপেক্ষে দেশে ভারতীয় ছবি আমদানিতে সম্মতি দিয়েছে ‘সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ’। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের ব্যানারে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনার বিষয়ে লিখিতভাবে জানান।

তথ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এসব শর্ত বা দাবির বিষয়ে তিনি আলাপ করবেন। আপনারা সবাই একমত হয়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু শর্তসাপেক্ষে ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির ব্যাপারে একমত হয়েছেন। অতীতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার কাছে দাবি করা হয়েছিল ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানি করার জন্য৷ এটা আমি বারবার বলে এসেছি যে, সব সমিতি যদি একমত হয় (তাহলে বাস্তবায়ন সম্ভব), না হলে সেক্ষেত্রে আমরা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারব না।

এক্ষেত্রে লিখিত প্রস্তাবনায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান আপদকালীন সময়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র দর্শকদের হলে ফিরিয়ে আনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণ সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিম্নলিখিত শর্তাবলী সাপেক্ষে বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি করা যেতে পারে।

শর্তাবলী-

শুধুমাত্র বাংলাদেশের বৈধ চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশকরা বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি করার সুযোগ পাবেন।

বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র পরীক্ষামূলকভাবে শুধুমাত্র ২ বছরের জন্য আমদানি করার সুযোগ থাকবে।

বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি করার বিষয়ে সরকারি অনুমতি পাওয়ার পর প্রথম বছর ১০টি ও পরবর্তী বছর ৮টি চলচ্চিত্র আমদানি করতে পারবে। এখানে উল্লেখ থাকে যে, সব প্রেক্ষাগৃহ প্রতিবছর ৫২ সপ্তাহের মধ্যে ২০ (বিশ) সপ্তাহ আমদানি করা চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে পারবে।

আমদানি করা বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র মুক্তিকালীন অবশ্যই আমাদের বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। পাশাপাশি আমদানি করা চলচ্চিত্রের সঙ্গে বাজারে টিকে থাকার জন্য আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সরবোর্ডকে নমনীয় হতে হবে।

বাংলাদেশে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ উল আযহা ও দুর্গা পূজার সপ্তাহে বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) কোনও চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা যাবে না।

আমদানি করা বিদেশি ছবি (উপমহাদেশীয় ভাষার) আমদানি করার আগে অথবা অনুমতি পাওয়ার পর প্রতিটি চলচ্চিত্রের জন্য আমদানিকারক সংস্থা নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুদান (আলোচনা ও শর্ত সাপেক্ষে) সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের তহবিলে জমা দিতে হবে। উল্লেখিত অনুদান চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট স্ব স্ব সংগঠনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও কল্যাণের ব্যয়ে ব্যবহৃত হবে। এখানে উল্লেখ থাকে যে, চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে।

শর্ত সাপেক্ষে বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আদমানির জন্য আবেদনকালীন আবেদন পত্রের সঙ্গে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের ছাড়পত্র সংযুক্ত থাকতে হবে।

বিদেশি চলচ্চিত্র (উপমহাদেশীয় ভাষার) আমদানি করার পাশাপাশি দেশীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে আগ্রহী করার নিমিত্তে বাংলাদেশের বন্ধ হয়ে থাকা প্রেক্ষাগৃহকে আধুনিকায়ন করে চালু করা ও নতুন প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের জন্য চলচ্চিত্রবান্ধব প্রধানমন্ত্রী যে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন সেই তহবিল থেকে পর্যায়ক্রমে শুধু মাত্র ২০০ কোটি টাকা বিএফডিসির মাধ্যমে নির্মাণ ক্ষেত্রে বরাদ্দ করা যেতে পারে, তাতে করে প্রযোজক পরিবেশকরা নতুন উদ্যোমে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বিএফডিসিও বাণিজ্যিকভাবে আয় ক্ষমতা বাড়াতে পারে।

আমাদের দেশীয় চলচ্চিত্রের প্রতি চলচ্চিত্র দর্শকদের আরও আকৃষ্ট করার জন্য কাহিনী ও চিত্রনাট্যের প্রয়োজনে এবং আমাদের প্রযোজকদের অর্থ বিনিয়োগ কমানোর লক্ষ্যে বর্তমান “যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা” রোহিত করে আমাদের পূর্বেকার “যৌথ প্রযোজনার নীতিমালা” পুরনরায় চালু করতে হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে প্রযোজক ও দর্শকদের চাহিদা মতো শিল্পী সংখ্যার ঘাটতি হয়ে যাওয়াতে ছবি নির্মাণ করারও বাণিজ্যিকভাবে হুমকীর কারণ। সেই লক্ষ্যে আমরা মনে করি বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ১৯৮৬ সালের মতো ‘নতুন মুখের সন্ধানে’র নামে একটি প্রকল্প চালু করে সারা বাংলাদেশ থেকে বাচাই করে শিল্পী সংগ্রহ করতে পারি। যার ফলে আমরা শিল্পী সংকট থেকেও মুক্তি পেতে পারি।

বিজনেস আওয়ার/১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: