ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’গানের গায়ক মারা গেছেন

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • 3

বিনোদন ডেস্ক:‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’গানের গায়ক সুভাষ চক্রবর্তী মারা গেছেন। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জন্মসূত্রে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা সুভাষ চক্রবর্তী। কিন্তু কলকাতায় বসবাস করতেন তিনি। অনেক দিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন সুভাষ চক্রবর্তী। বেশ কয়েকদিন ধরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মারা যান তিনি।

সুভাষ চক্রবর্তীর কন্যা বিখ্যাত লোক সংগীতশিল্পী অর্পিতা চক্রবর্তী। বাবার মৃত্যুর খবরটি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান তিনি। পরে ফেসবুক লাইভে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন অর্পিতা। এসময় তিনি বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি বাবার খবর আমাকে এভাবে জানাতে হবে। আজ (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে মারা গেছেন বাবা। কয়েক দিন ধরে হাপাতালে ভর্তি ছিলেন। পড়শু দিন বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর থেকে ভেন্টিলেশনে ছিলেন। তারপর আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।’

‘বাবা সারা জীবন অনেক গান লিখেছেন, সুর করেছেন, গেয়েছেন। অনেক মানুষের সঙ্গে কাজ করেছেন। বাবার প্রথম রেকর্ড ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানটি। এটি রেকর্ড করেছিল ইন্ডিগো। এই কোম্পানি থেকে শুরু করে বাবা যত মানুষের সঙ্গে কাজ করেছেন, সবার কাছে তার মৃত্যুর খবরটি পৌঁছে দিতেই আমার এই লাইভ।’ বলেন অর্পিতা।

‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ মূলত একটি কবিতা। এটির রচয়িতার নাম অরুণ কুমার চক্রবর্তী। এ কবিতা সুর করে কণ্ঠে তুলেন সুভাষ চক্রবর্তী। যা তাকে রাতারাতি খ্যাতি এনে দেয়। কবি অরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রচলিত সুরে সুভাষ আমার ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানটা গাওয়ার পরেই তাকে রেকর্ডিং কোম্পানিতে নিয়ে যাই। পূজার গান হিসেবে হেমন্ত, মান্না, আরতিদের পাশে নতুন মুখ হিসেবে সুভাষ উঠে এসেছিলেন। সুভাষের মৃত্যুর খবর অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’’

বরেণ্য এই লোক শিল্পীর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে বাংলা সংগীতাঙ্গেনে। শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শোক বার্তায় তিনি লিখেছেন—‘বিশিষ্ট লোকসংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার সুভাষ চক্রবর্তীর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা সুভাষবাবু ঐতিহ্যময় লোকসংগীতকে বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। তার সৃষ্ট কিছু অবিস্মরণীয় লোকগান আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তার প্রয়াণে সংগীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। আমি সুভাষ চক্রবর্তীর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

১৯৫২ সালে ২৩ জানুয়ারি বাঁকুড়াতে জন্মগ্রহণ করেন সুভাষ চক্রবর্তী। ছোটবেলা থেকেই গান পাগল ছিলেন তিনি। লোকসংগীত গেয়ে লাখ লাখ মানুষের মন ছুঁয়েছেন। কলকাতার উঁচু বাড়ি, ব্রিজ, কংক্রিটের জঙ্গল তাকে খুব বেশিক্ষণ বেঁধে রাখতে পারত না। সুযোগ পেলেই ছুটে যেতেন বাঁকুড়াতে। ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’, ‘বাঁকুড়া মাটিকে পেণাম করি দিনে দুপুরে’-এর মতো কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন সুভাষ চক্রবর্তী।

বিজনেস আওয়ার/২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এস এম

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’গানের গায়ক মারা গেছেন

পোস্ট হয়েছে : ০৩:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিনোদন ডেস্ক:‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’গানের গায়ক সুভাষ চক্রবর্তী মারা গেছেন। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জন্মসূত্রে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা সুভাষ চক্রবর্তী। কিন্তু কলকাতায় বসবাস করতেন তিনি। অনেক দিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন সুভাষ চক্রবর্তী। বেশ কয়েকদিন ধরে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল দুপুর ১২টার দিকে মারা যান তিনি।

সুভাষ চক্রবর্তীর কন্যা বিখ্যাত লোক সংগীতশিল্পী অর্পিতা চক্রবর্তী। বাবার মৃত্যুর খবরটি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান তিনি। পরে ফেসবুক লাইভে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন অর্পিতা। এসময় তিনি বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি বাবার খবর আমাকে এভাবে জানাতে হবে। আজ (২৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে মারা গেছেন বাবা। কয়েক দিন ধরে হাপাতালে ভর্তি ছিলেন। পড়শু দিন বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর থেকে ভেন্টিলেশনে ছিলেন। তারপর আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।’

‘বাবা সারা জীবন অনেক গান লিখেছেন, সুর করেছেন, গেয়েছেন। অনেক মানুষের সঙ্গে কাজ করেছেন। বাবার প্রথম রেকর্ড ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানটি। এটি রেকর্ড করেছিল ইন্ডিগো। এই কোম্পানি থেকে শুরু করে বাবা যত মানুষের সঙ্গে কাজ করেছেন, সবার কাছে তার মৃত্যুর খবরটি পৌঁছে দিতেই আমার এই লাইভ।’ বলেন অর্পিতা।

‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ মূলত একটি কবিতা। এটির রচয়িতার নাম অরুণ কুমার চক্রবর্তী। এ কবিতা সুর করে কণ্ঠে তুলেন সুভাষ চক্রবর্তী। যা তাকে রাতারাতি খ্যাতি এনে দেয়। কবি অরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রচলিত সুরে সুভাষ আমার ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’ গানটা গাওয়ার পরেই তাকে রেকর্ডিং কোম্পানিতে নিয়ে যাই। পূজার গান হিসেবে হেমন্ত, মান্না, আরতিদের পাশে নতুন মুখ হিসেবে সুভাষ উঠে এসেছিলেন। সুভাষের মৃত্যুর খবর অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’’

বরেণ্য এই লোক শিল্পীর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে বাংলা সংগীতাঙ্গেনে। শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শোক বার্তায় তিনি লিখেছেন—‘বিশিষ্ট লোকসংগীতশিল্পী, গীতিকার ও সুরকার সুভাষ চক্রবর্তীর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বাসিন্দা সুভাষবাবু ঐতিহ্যময় লোকসংগীতকে বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। তার সৃষ্ট কিছু অবিস্মরণীয় লোকগান আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তার প্রয়াণে সংগীত জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হলো। আমি সুভাষ চক্রবর্তীর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

১৯৫২ সালে ২৩ জানুয়ারি বাঁকুড়াতে জন্মগ্রহণ করেন সুভাষ চক্রবর্তী। ছোটবেলা থেকেই গান পাগল ছিলেন তিনি। লোকসংগীত গেয়ে লাখ লাখ মানুষের মন ছুঁয়েছেন। কলকাতার উঁচু বাড়ি, ব্রিজ, কংক্রিটের জঙ্গল তাকে খুব বেশিক্ষণ বেঁধে রাখতে পারত না। সুযোগ পেলেই ছুটে যেতেন বাঁকুড়াতে। ‘লাল পাহাড়ির দেশে যা’, ‘বাঁকুড়া মাটিকে পেণাম করি দিনে দুপুরে’-এর মতো কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন সুভাষ চক্রবর্তী।

বিজনেস আওয়ার/২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩/এস এম

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: