ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সহজ শর্তে পাকিস্তানকে আর কোনো সহায়তা দিবেনা সৌদি

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩
  • 0

A handout picture provided by the Saudi Royal Palace shows Saudi Arabia's Crown Prince Mohammed Bin Salman (R) welcoming Pakistani Prime Minister Shehbaz Sharif in Jeddah on April 30, 2022. (Photo by Bandar AL-JALOUD / Saudi Royal Palace / AFP) / RESTRICTED TO EDITORIAL USE - MANDATORY CREDIT "AFP PHOTO / SAUDI ROYAL PALACE / BANDAR AL-JALOUD" - NO MARKETING - NO ADVERTISING CAMPAIGNS - DISTRIBUTED AS A SERVICE TO CLIENTS

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানকে সহজে আর কোনো অর্থ সহায়তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। শনিবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডেল ইস্ট আই।

সুদ-বিহীন ঋণ এবং সহজে আর্থিক সহায়তা দিতে সৌদি আরবের অপরাগতা প্রকাশের বিষয়টি পাকিস্তান সরকারের জন্য বড় একটি ধাক্কা এবং চমকের বিষয় ছিল।

এরইমধ্যে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানে যখন অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা চলছে, তখন বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও তাদের সহায়তা করছে না।

আন্তর্জাতিক ঋণদাতারা পাকিস্তানের কাছে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার পাবে। যা আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে। আর এমন সময়ে দেশটির দরকার ডলার। যদি তারা ডলার না পায় তাহলে দেশটির নাম ঋণ খেলাপির তালিকায় ওঠবে। বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদশিক রিজার্ভ ৪ বিলিয়ন ডলারেরও কম রয়েছে।

চলমান অর্থনৈতিক দুরাবস্থা কাটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। কিন্তু এ ঋণ বিতরণটি থমকে আছে। যদি পাকিস্তান আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ না পায় তাহলে অন্য দেশের কাছ থেকেও সহায়তা পাওয়ার বিষয়টি ঝুলে যাবে।

একজন অর্থনৈতিক বিশ্লেষক জানিয়েছেন, সৌদি আরব পাকিস্তানকে শর্ত দিয়েছে, ঋণ পেতে হলে অর্থনৈতিক অবকাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। এই একই রকম শর্ত দিয়েছিল আইএমএফও।

সৌদি আরবের কিং ফয়সাল সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইসলামিক স্টাডিসের সহকারী ফেলো উমর করিম বলেছেন, ‘পাকিস্তান সরকার সৌদির সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছে। আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অথবা প্রধানমন্ত্রীর ফোনেই গালফ দেশগুলো আর্থিক সহায়তা দিত। কিন্তু এবার পাকিস্তানকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’

ধারণা করা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন পাকিস্তানের সেনা প্রধান। আর্থিক সহায়তার ব্যাপারে কথা বলতে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। কিন্তু পাক সেনা প্রধান ক্রাউন প্রিন্সকে বোঝাতে ব্যর্থ হন।

সৌদি আরবের নীতির পরিবর্তন

ঋণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সৌদি আরব তাদের নীতি পরিবর্তন করেছে। জানুয়ারিতে সৌদি অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান জানান, ‘আমরা অতীতে সহজে ঋণ সহায়তা দিয়েছি। কিন্তু এ নীতি পরিবর্তন করা হবে।’

আটলান্টিক কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ ফেলো কামাল আলম বলেছেন, সৌদি আরবের নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি পাকিস্তানের মাথায় নেওয়া উচিত।

তার মতে পাকিস্তান এমন একটি ভ্রান্ত ধারণায় আছে যে, তারা হলো পারমাণবিক শক্তিসমৃদ্ধ দেশ। তাদের আছে ২২ কোটি জনসংখ্যা। আর এত বড় একটি দেশকে বিশ্ব ফেলে দিতে পারবে না। এ কারণে দেশটির সরকার ও সেনাবাহিনী মনে করে তারা সহজেই প্রয়োজনীয় ঋণ পেয়ে যাবে।

সূত্র: মিডেল ইস্ট আই

বিজনেস আওয়ার/১৯ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সহজ শর্তে পাকিস্তানকে আর কোনো সহায়তা দিবেনা সৌদি

পোস্ট হয়েছে : ০২:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানকে সহজে আর কোনো অর্থ সহায়তা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি আরব। শনিবার (১৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডেল ইস্ট আই।

সুদ-বিহীন ঋণ এবং সহজে আর্থিক সহায়তা দিতে সৌদি আরবের অপরাগতা প্রকাশের বিষয়টি পাকিস্তান সরকারের জন্য বড় একটি ধাক্কা এবং চমকের বিষয় ছিল।

এরইমধ্যে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তানে যখন অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা চলছে, তখন বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও তাদের সহায়তা করছে না।

আন্তর্জাতিক ঋণদাতারা পাকিস্তানের কাছে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার পাবে। যা আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে শোধ করতে হবে। আর এমন সময়ে দেশটির দরকার ডলার। যদি তারা ডলার না পায় তাহলে দেশটির নাম ঋণ খেলাপির তালিকায় ওঠবে। বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদশিক রিজার্ভ ৪ বিলিয়ন ডলারেরও কম রয়েছে।

চলমান অর্থনৈতিক দুরাবস্থা কাটাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। কিন্তু এ ঋণ বিতরণটি থমকে আছে। যদি পাকিস্তান আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ না পায় তাহলে অন্য দেশের কাছ থেকেও সহায়তা পাওয়ার বিষয়টি ঝুলে যাবে।

একজন অর্থনৈতিক বিশ্লেষক জানিয়েছেন, সৌদি আরব পাকিস্তানকে শর্ত দিয়েছে, ঋণ পেতে হলে অর্থনৈতিক অবকাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। এই একই রকম শর্ত দিয়েছিল আইএমএফও।

সৌদি আরবের কিং ফয়সাল সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইসলামিক স্টাডিসের সহকারী ফেলো উমর করিম বলেছেন, ‘পাকিস্তান সরকার সৌদির সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছে। আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অথবা প্রধানমন্ত্রীর ফোনেই গালফ দেশগুলো আর্থিক সহায়তা দিত। কিন্তু এবার পাকিস্তানকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’

ধারণা করা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন পাকিস্তানের সেনা প্রধান। আর্থিক সহায়তার ব্যাপারে কথা বলতে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। কিন্তু পাক সেনা প্রধান ক্রাউন প্রিন্সকে বোঝাতে ব্যর্থ হন।

সৌদি আরবের নীতির পরিবর্তন

ঋণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সৌদি আরব তাদের নীতি পরিবর্তন করেছে। জানুয়ারিতে সৌদি অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান জানান, ‘আমরা অতীতে সহজে ঋণ সহায়তা দিয়েছি। কিন্তু এ নীতি পরিবর্তন করা হবে।’

আটলান্টিক কাউন্সিলের জ্যেষ্ঠ ফেলো কামাল আলম বলেছেন, সৌদি আরবের নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি পাকিস্তানের মাথায় নেওয়া উচিত।

তার মতে পাকিস্তান এমন একটি ভ্রান্ত ধারণায় আছে যে, তারা হলো পারমাণবিক শক্তিসমৃদ্ধ দেশ। তাদের আছে ২২ কোটি জনসংখ্যা। আর এত বড় একটি দেশকে বিশ্ব ফেলে দিতে পারবে না। এ কারণে দেশটির সরকার ও সেনাবাহিনী মনে করে তারা সহজেই প্রয়োজনীয় ঋণ পেয়ে যাবে।

সূত্র: মিডেল ইস্ট আই

বিজনেস আওয়ার/১৯ মার্চ, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: