ঢাকা , সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লোন করে রিং শাইনের পরিচালন ব্যয় জোগাবে

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩
  • 62

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রিং শাইন টেক্সটাইল লোকসানে ডুবেছে। লোকসান পরিমান এতো বেশি যে, কোম্পানিটির সুষ্ঠভাবে পরিচালন ব্যয় জোগাতে রাইট বা ব্যাংক লোনের দিকে ঝুঁকবে বলে জানিয়েছে কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা।

তারা বলছেন, রিং শাইন সর্বশেষ দুই প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি টাকা। ২য় প্রান্তিকে বা ৩ মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান পরিমান দাঁড়ায় ১৯ কোটি টাকা। কোম্পানির ৩০ জুন ২০২১ সালে হিসেবে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের লোনের বোঝা। স্বল্পমেয়াদি লোন রয়েছে ২২৮ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে বেকায়দায় পড়েছে কোম্পানিটি। এমন অবস্থায় কোম্পানির প্রতিদিনের পরিচালন ব্যয় জোগাতে ব্যাংক লোনের দিকে ঝুঁকতে হবে। নইলে কোম্পানিটির রাইট শেয়ারের মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।

প্রতিদিনের পরিচালন ব্যয় প্রসঙ্গে কোম্পানিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক কোম্পানিটির এক কর্মকর্তা বলেন, ইতিমধ্যে ব্যাংকে রিং শাইনের মোটা অংকের লোন রয়েছে। এতো লোনের পর নতুন করে আরো লোন পাওয়া অনিশ্চিত।

এদিকে রিং শাইনের দ্বিতীয় প্রান্তিক বা শেষ তিন মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান বেড়েছে ১০২ শতাংশ। আর দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাস (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান বেড়েছে ১২৩ শতাংশ। কোম্পানিটি দুই প্রান্তিকেই লোকসান পরিমান গুনতে হয়েছে। যদিও আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২১ সাল) লোকসান পরিমান কম ছিল।

রিং শাইন চলতি অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৭৬ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল দশমিক ৩৪ টাকা। এ হিসাবে লোকসান বেড়েছে দশমিক ৪২ টাকা বা ১২৩ শতাংশ।

এই কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ২য় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৩৮ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল দশমিক শূন্য ১ টাকা। এ হিসাবে লোকসান পরিমান বেড়েছে দশমিক ৩৯ টাকা বা ১০২ শতাংশ। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে নেগেটিভ ৩ দশমিক ২৩ টাকায়। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশে এমন তথ্য বেরিয়ে আসে। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

রিং শাইনের লোকসান প্রসঙ্গে রিং শাইন কোম্পানির সচিব অনিরুদ্ধ পিয়ালকে মুঠোফোনে বলেন, গ্যাসের দাম বেড়েছে। আবার বাইরের থেকে বিদ্যুৎ এনে উৎপাদন করতে হচ্ছে। এছাড়া প্রায় ১৫ বছরের মেশিন দিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। এসব মেশিন চালু হতেই দুই ঘন্টা সময় লেগে যায়। যেখানে অন্যদের মেশিন ১০ মিনিটেই চালু হয়। সব মিলিয়ে আমাদের উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৫গুন বেড়ে যায়। আমাদের প্রচুর অর্ডার আছে। কিন্তু অর্থের অভাবে উৎপাদন করতে পাচ্ছি না। এই কষ্টের মধ্যেও শ্রমিকদের বেতন দিয়ে যাচ্ছি।

বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে রয়েছে রিং শাইন জানিয়ে তিনি বলেন, কোম্পানিটি বর্তমানে লোকসানে রয়েছে। অতীতে এটার এক নাম্বার পজিশনে ছিল। সেই অবস্থান ফিরে পেতে কাজ করছি। কিন্তু সামনে এগিয়ে নিতে আমাদের অর্থে প্রয়োজন রয়েছে। সেই জন্য রাইট শেয়ার ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছি। রাইট শেয়ার ছাড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন লাগে। আমরা সেই দিকে কাজ করছি। এছাড়া ব্যাংক থেকেও লোন পেতে কাজ করছি। অর্থ আসলেই সব সমস্যা দূর হবে।

বিজনেস আওয়ার/২৯ মার্চ, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

লোন করে রিং শাইনের পরিচালন ব্যয় জোগাবে

পোস্ট হয়েছে : ১২:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রিং শাইন টেক্সটাইল লোকসানে ডুবেছে। লোকসান পরিমান এতো বেশি যে, কোম্পানিটির সুষ্ঠভাবে পরিচালন ব্যয় জোগাতে রাইট বা ব্যাংক লোনের দিকে ঝুঁকবে বলে জানিয়েছে কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা।

তারা বলছেন, রিং শাইন সর্বশেষ দুই প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩৮ কোটি টাকা। ২য় প্রান্তিকে বা ৩ মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান পরিমান দাঁড়ায় ১৯ কোটি টাকা। কোম্পানির ৩০ জুন ২০২১ সালে হিসেবে গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের লোনের বোঝা। স্বল্পমেয়াদি লোন রয়েছে ২২৮ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে বেকায়দায় পড়েছে কোম্পানিটি। এমন অবস্থায় কোম্পানির প্রতিদিনের পরিচালন ব্যয় জোগাতে ব্যাংক লোনের দিকে ঝুঁকতে হবে। নইলে কোম্পানিটির রাইট শেয়ারের মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।

প্রতিদিনের পরিচালন ব্যয় প্রসঙ্গে কোম্পানিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক কোম্পানিটির এক কর্মকর্তা বলেন, ইতিমধ্যে ব্যাংকে রিং শাইনের মোটা অংকের লোন রয়েছে। এতো লোনের পর নতুন করে আরো লোন পাওয়া অনিশ্চিত।

এদিকে রিং শাইনের দ্বিতীয় প্রান্তিক বা শেষ তিন মাস (অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান বেড়েছে ১০২ শতাংশ। আর দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাস (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২২ সাল) হিসেবে লোকসান বেড়েছে ১২৩ শতাংশ। কোম্পানিটি দুই প্রান্তিকেই লোকসান পরিমান গুনতে হয়েছে। যদিও আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর ২০২১ সাল) লোকসান পরিমান কম ছিল।

রিং শাইন চলতি অর্থবছরের (২০২২-২০২৩) প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৭৬ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছিল দশমিক ৩৪ টাকা। এ হিসাবে লোকসান বেড়েছে দশমিক ৪২ টাকা বা ১২৩ শতাংশ।

এই কোম্পানিটির চলতি অর্থবছরের ২য় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে দশমিক ৩৮ টাকা। যার পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয়েছিল দশমিক শূন্য ১ টাকা। এ হিসাবে লোকসান পরিমান বেড়েছে দশমিক ৩৯ টাকা বা ১০২ শতাংশ। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে নেগেটিভ ৩ দশমিক ২৩ টাকায়। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ সভায় সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশে এমন তথ্য বেরিয়ে আসে। বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

রিং শাইনের লোকসান প্রসঙ্গে রিং শাইন কোম্পানির সচিব অনিরুদ্ধ পিয়ালকে মুঠোফোনে বলেন, গ্যাসের দাম বেড়েছে। আবার বাইরের থেকে বিদ্যুৎ এনে উৎপাদন করতে হচ্ছে। এছাড়া প্রায় ১৫ বছরের মেশিন দিয়ে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। এসব মেশিন চালু হতেই দুই ঘন্টা সময় লেগে যায়। যেখানে অন্যদের মেশিন ১০ মিনিটেই চালু হয়। সব মিলিয়ে আমাদের উৎপাদন ব্যয় প্রায় ৫গুন বেড়ে যায়। আমাদের প্রচুর অর্ডার আছে। কিন্তু অর্থের অভাবে উৎপাদন করতে পাচ্ছি না। এই কষ্টের মধ্যেও শ্রমিকদের বেতন দিয়ে যাচ্ছি।

বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে রয়েছে রিং শাইন জানিয়ে তিনি বলেন, কোম্পানিটি বর্তমানে লোকসানে রয়েছে। অতীতে এটার এক নাম্বার পজিশনে ছিল। সেই অবস্থান ফিরে পেতে কাজ করছি। কিন্তু সামনে এগিয়ে নিতে আমাদের অর্থে প্রয়োজন রয়েছে। সেই জন্য রাইট শেয়ার ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছি। রাইট শেয়ার ছাড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন লাগে। আমরা সেই দিকে কাজ করছি। এছাড়া ব্যাংক থেকেও লোন পেতে কাজ করছি। অর্থ আসলেই সব সমস্যা দূর হবে।

বিজনেস আওয়ার/২৯ মার্চ, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: