ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষাও পেছাতে পারে!

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • 0

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: দেশে করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সকল পাবলিক পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মাস পার হতে চললেও এখনো চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে যেতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, সাধারণত জুলাই মাসে দশম শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনী আর অক্টোবরে নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া হয়। আর দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী বা অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা জুলাই-আগস্টে এবং ডিসেম্বরে নির্বাচনী পরীক্ষা হয়। এরপর নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করা হয়।

ইতোমধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেছে। আগামী বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষাও হয়নি। একাদশ শ্রেণিতে কলেজ পর্যায়ে নেয়া বিভিন্ন ক্লাস টেস্ট আর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে এসব শিক্ষার্থীকে ‘অটো পাস’ দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। করোনাকালে প্রাতিষ্ঠানিক পাঠদান বন্ধ। এ কারণে পরীক্ষা যথাসময়ে শেষ করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তবে প্রতিষ্ঠান খোলার পরে পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এদিকে দেরি হলেও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে অভিভাবকরা। এ বিষয়ে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান জিয়াউল কবীর দুলু বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম শেষ করে পরীক্ষা নেয়া উচিত। অন্যথায় শেখা ও জ্ঞান অর্জনে ঘাটতি থেকে গেলে তা পরবর্তী জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা গ্রহণে ইতোমধ্যে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। রাজধানীর ইন্দিরা রোডের নজরুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক ৮ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে ৬ দফা প্রস্তাব সংবলিত স্মারকলিপিও দেন।

সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ ব্যবস্থায় এই পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ও চিন্তা করছে। সেই কারণে সারাদেশ থেকে সিটপ্ল্যান সংগ্রহ করেছে বোর্ডগুলো। সে অনুযায়ী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩ ফুট দূরত্ব রেখে ‘জেড’ সিস্টেমে শিক্ষার্থীদের বসানো হবে। শিক্ষা বোর্ড থেকে নভেম্বরে পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

তাছাড়া দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অবশ্য আরও তিনটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে রাখা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-শিক্ষার্থীদের অতীত পরীক্ষার (জেএসসি-এসএসসি) ফলের ওপর ভিত্তি করে গ্রেড দেয়া; স্বল্পপরিসরে পরীক্ষা নেয়া। এই দুটি গ্রহণ না করলে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করা।

উল্লেখ্য, এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষা গত এপ্রিলে নির্ধারিত থাকলেও তা নেয়া যায়নি। এই পরীক্ষা নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় তা বাতিলও করা হয়নি। ইতোমধ্যে এই পরীক্ষার প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর জীবন থেকে চলে গেছে সাড়ে পাঁচ মাস। যথাসময়ে পরীক্ষা হলে তারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত।

বিজনেস আওয়ার/১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আগামী বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষাও পেছাতে পারে!

পোস্ট হয়েছে : ১০:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: দেশে করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সকল পাবলিক পরীক্ষা পিছিয়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মাস পার হতে চললেও এখনো চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে যেতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, সাধারণত জুলাই মাসে দশম শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনী আর অক্টোবরে নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়া হয়। আর দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী বা অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা জুলাই-আগস্টে এবং ডিসেম্বরে নির্বাচনী পরীক্ষা হয়। এরপর নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করা হয়।

ইতোমধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেছে। আগামী বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষাও হয়নি। একাদশ শ্রেণিতে কলেজ পর্যায়ে নেয়া বিভিন্ন ক্লাস টেস্ট আর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে এসব শিক্ষার্থীকে ‘অটো পাস’ দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি এবং এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। করোনাকালে প্রাতিষ্ঠানিক পাঠদান বন্ধ। এ কারণে পরীক্ষা যথাসময়ে শেষ করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তবে প্রতিষ্ঠান খোলার পরে পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এদিকে দেরি হলেও এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে অভিভাবকরা। এ বিষয়ে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান জিয়াউল কবীর দুলু বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রম শেষ করে পরীক্ষা নেয়া উচিত। অন্যথায় শেখা ও জ্ঞান অর্জনে ঘাটতি থেকে গেলে তা পরবর্তী জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

জানা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা গ্রহণে ইতোমধ্যে অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। রাজধানীর ইন্দিরা রোডের নজরুল ইসলাম নামে এক অভিভাবক ৮ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে ৬ দফা প্রস্তাব সংবলিত স্মারকলিপিও দেন।

সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ ব্যবস্থায় এই পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ও চিন্তা করছে। সেই কারণে সারাদেশ থেকে সিটপ্ল্যান সংগ্রহ করেছে বোর্ডগুলো। সে অনুযায়ী, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৩ ফুট দূরত্ব রেখে ‘জেড’ সিস্টেমে শিক্ষার্থীদের বসানো হবে। শিক্ষা বোর্ড থেকে নভেম্বরে পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

তাছাড়া দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে অবশ্য আরও তিনটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে রাখা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-শিক্ষার্থীদের অতীত পরীক্ষার (জেএসসি-এসএসসি) ফলের ওপর ভিত্তি করে গ্রেড দেয়া; স্বল্পপরিসরে পরীক্ষা নেয়া। এই দুটি গ্রহণ না করলে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করা।

উল্লেখ্য, এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষা গত এপ্রিলে নির্ধারিত থাকলেও তা নেয়া যায়নি। এই পরীক্ষা নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় তা বাতিলও করা হয়নি। ইতোমধ্যে এই পরীক্ষার প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর জীবন থেকে চলে গেছে সাড়ে পাঁচ মাস। যথাসময়ে পরীক্ষা হলে তারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করত।

বিজনেস আওয়ার/১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: