ঢাকা , শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘স্যার’ না ডাকায় ঢাবি শিক্ষার্থীকে হয়রানি

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩
  • 8

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক কর্মকর্তাকে ‘স্যার’ সম্বোধন না করায় মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও সূর্য সেন হলের আবাসিক ছাত্র।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ২০৮ নং রুমে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম বোরহান উদ্দিন। তিনি রেজিস্ট্রার অফিসের সেকশন অফিসার (শিক্ষা-২)।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যে নামের বানানে একটি ভুল হওয়ায় নাম সংশোধনের সকল প্রসিডিউর মেনে, সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ২০৮ নম্বর কক্ষে যাই। সেখানে গিয়ে নাম সংশোধনের জন্য দায়িত্বরত সেকশন অফিসার বোরহান উদ্দিন (শিক্ষা-২) এর ডেস্কে যাই। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর

সাড়ে ১০টার দিকে তিনি অফিসে আসেন। তারপর আমি আমার কাগজপত্র দেখালে, তিনি আমার ভর্তি সনদ যোগ করতে বলেন। আমি হল থেকে ভর্তি সনদ নিয়ে ১১.৪৫ মিনিটে তার কাছে যাই। যাওয়ার পর উনি বয়স্ক হওয়ায় ‘কাকা’ বলে সম্বোধন করি। তার বয়স ৫৭-৫৮ হবে। তখনই তিনি আমার প্রতি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বলেন, তুমি আমাকে কাকা কেন বলছ? এটা কি কোনো অফিসিয়াল ভাষা? এখনো অফিসের ভাষা শেখনি?’ আমি তাকে বললাম তাহলে আপনাকে কী ডাকব? তিনি বলেন, ‘অফিসের ভাষা স্যার। স্যার ডাকবা। আমি বললাম, আপনাকে স্যার কেন ডাকব? আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আপনি কি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক? তাহলে আপনাকে স্যার ডাকতাম।

এরপর তিনি বলেন, আমরা স্যার না হলেও তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার। তার পাশের ডেস্কেরও একজন সেকশন অফিসার আমার উপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলতে থাকেন। তিনিও বলেন, ‘স্যার না ডাকতে পারলে সরাসরি তার নাম ধরে ডাকবা। ভাই/কাকা এগুলো ডাকতে পারবা না।’ আমি এটার প্রতিবাদ করি। একপর্যায়ে রুমের সবাই বিষয়টি শুনতে পাচ্ছিল। পরে আমি বলেছি, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে বিচার দেব। তিনি বলেন, দাও বিচার! দেখি কী করতে পার।

হয়রানি ও কাজ করে না দেওয়ার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী এ শিক্ষার্থী বলেন, পরে আমার কাজ করে দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি বলেন আরও অনেক কাগজ যুক্ত করতে হবে। অথচ পূর্বে তিনি যেসব কাগজ নিয়ে যেতে বলেছিলেন, সবই নিয়েছি। এ কথা বলার পর তিনি বলেন, আমি পারব না। তুমি অন্য ডেস্কে যাও। পরে অন্য রুমে গিয়ে এক ভাইয়ের সহযোগিতায় পেপারসগুলো জমা দিয়েছি। এখনো আমার কাজটা হয়নি।

বিচার দাবি করে তিনি বলেন, এখানে বোরহান সাহেব আমাকে হয়রানি করেছে। তিনি তার দায়িত্ব পালন করেননি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেকশন অফিসার বোরহান উদ্দিন বলেন, বিষয়টা তেমন না। উনি এসে আংকেল ডাকা শুরু করায় বললাম আংকেল তো অফিসিয়াল ভাষা নয়। অন্য কিছু ডাকেন। স্যার বলাটা কথার কথা পাশের কেউ বলেছে হয়ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কেউ কেউ ফোন করে বিষয়টি জানাচ্ছে। কেউ অভিযোগ নিয়ে এলে শুনবো।

বিজনেস আওয়ার/ ১৪ জুলাই,২০২৩/ এসএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

‘স্যার’ না ডাকায় ঢাবি শিক্ষার্থীকে হয়রানি

পোস্ট হয়েছে : ০৪:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক কর্মকর্তাকে ‘স্যার’ সম্বোধন না করায় মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ নামে এক শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও সূর্য সেন হলের আবাসিক ছাত্র।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ২০৮ নং রুমে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম বোরহান উদ্দিন। তিনি রেজিস্ট্রার অফিসের সেকশন অফিসার (শিক্ষা-২)।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যে নামের বানানে একটি ভুল হওয়ায় নাম সংশোধনের সকল প্রসিডিউর মেনে, সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ২০৮ নম্বর কক্ষে যাই। সেখানে গিয়ে নাম সংশোধনের জন্য দায়িত্বরত সেকশন অফিসার বোরহান উদ্দিন (শিক্ষা-২) এর ডেস্কে যাই। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর

সাড়ে ১০টার দিকে তিনি অফিসে আসেন। তারপর আমি আমার কাগজপত্র দেখালে, তিনি আমার ভর্তি সনদ যোগ করতে বলেন। আমি হল থেকে ভর্তি সনদ নিয়ে ১১.৪৫ মিনিটে তার কাছে যাই। যাওয়ার পর উনি বয়স্ক হওয়ায় ‘কাকা’ বলে সম্বোধন করি। তার বয়স ৫৭-৫৮ হবে। তখনই তিনি আমার প্রতি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বলেন, তুমি আমাকে কাকা কেন বলছ? এটা কি কোনো অফিসিয়াল ভাষা? এখনো অফিসের ভাষা শেখনি?’ আমি তাকে বললাম তাহলে আপনাকে কী ডাকব? তিনি বলেন, ‘অফিসের ভাষা স্যার। স্যার ডাকবা। আমি বললাম, আপনাকে স্যার কেন ডাকব? আমি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আপনি কি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক? তাহলে আপনাকে স্যার ডাকতাম।

এরপর তিনি বলেন, আমরা স্যার না হলেও তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার। তার পাশের ডেস্কেরও একজন সেকশন অফিসার আমার উপর আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলতে থাকেন। তিনিও বলেন, ‘স্যার না ডাকতে পারলে সরাসরি তার নাম ধরে ডাকবা। ভাই/কাকা এগুলো ডাকতে পারবা না।’ আমি এটার প্রতিবাদ করি। একপর্যায়ে রুমের সবাই বিষয়টি শুনতে পাচ্ছিল। পরে আমি বলেছি, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে বিচার দেব। তিনি বলেন, দাও বিচার! দেখি কী করতে পার।

হয়রানি ও কাজ করে না দেওয়ার অভিযোগ এনে ভুক্তভোগী এ শিক্ষার্থী বলেন, পরে আমার কাজ করে দেওয়ার অনুরোধ করলে তিনি বলেন আরও অনেক কাগজ যুক্ত করতে হবে। অথচ পূর্বে তিনি যেসব কাগজ নিয়ে যেতে বলেছিলেন, সবই নিয়েছি। এ কথা বলার পর তিনি বলেন, আমি পারব না। তুমি অন্য ডেস্কে যাও। পরে অন্য রুমে গিয়ে এক ভাইয়ের সহযোগিতায় পেপারসগুলো জমা দিয়েছি। এখনো আমার কাজটা হয়নি।

বিচার দাবি করে তিনি বলেন, এখানে বোরহান সাহেব আমাকে হয়রানি করেছে। তিনি তার দায়িত্ব পালন করেননি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেকশন অফিসার বোরহান উদ্দিন বলেন, বিষয়টা তেমন না। উনি এসে আংকেল ডাকা শুরু করায় বললাম আংকেল তো অফিসিয়াল ভাষা নয়। অন্য কিছু ডাকেন। স্যার বলাটা কথার কথা পাশের কেউ বলেছে হয়ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কেউ কেউ ফোন করে বিষয়টি জানাচ্ছে। কেউ অভিযোগ নিয়ে এলে শুনবো।

বিজনেস আওয়ার/ ১৪ জুলাই,২০২৩/ এসএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: