ঢাকা , সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সৈকতে ২৪ ঘণ্টায় ৫১ তিমির মৃত্যু

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩
  • 5

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ওয়েস্টার্নে একটি সমুদ্র সৈকতের বালিতে আটকা পড়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫১টি পাইলট তিমির মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুলাই) এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে প্রদেশের ‘পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া’ বন্যপ্রানী সুরক্ষা সংস্থার কর্মীরা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর প্রদেশের চেইনি সৈকতের বালিতে আটকা পড়ে অন্তত ৯৭টি পাইলট তিমি। দুঃখজনকভাবে রাত থেকে সকালের মধ্যে ৫১টি তিমির মৃত্যু হয়েছে। সংস্থার কর্মীদের তৎপরতায় জীবিত বাকি ৪৬টি তিমিকে গভীর সমুদ্রের দিকে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চেইনি সংকতের বেশ কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেগুলোর কোনোটিতে দেখা গেছে বেশ কিছু তিমি সৈকতের বালি ও অগভীর পানিতে আটকে পড়া অবস্থায় নিজেদের লেজ-পাখা ঝাপটাচ্ছে। কোনোটিতে ধেখা গেছে তারা সবাই জড়ো হয়ে স্থির পড়ে আছে।

পাইলট তিমি নামে তিমি হলেও এটি মূলত পরপয়েজ অর্থাৎ ডলফিন পরিবারের সদস্য। একটি পরিণত পুরুষ পাইলট তিমি দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ২০ ফুট এবং ওজনে তিন টন হতে পারে। অন্যদিকে একটি পরিণত নারী পাইলট তিমির দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১৬ ফুট এবং ওজন দেড় টন বা তার কিছু বেশি হয়।

তিমি প্রজাতির অন্য অনেক সদস্যের মতো পাইলট তিমিও শীতল পানিতে থাকতে পছন্দ করে এবং উচ্চ কম্পাঙ্কের মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ এবং শিকারের অনুসন্ধান করে। তাদের শিকারের তালিকায় রয়েছে মাছ, স্কুইড, অক্টোপাস প্রভৃতি সামুদ্রিক প্রাণী।

এই তিমি ব্যাপকমাত্রায় সামাজিকও। এক একটি দলে ২০টি থেকে শতাধিক পর্যন্ত তিমি দেখা যায়। জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট ভিভিন্ন কারণে কমছে পাইলট তিমির সংখ্যা। বিলুপ্তির ঝুঁকির বিচারে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত জাতিসংঘের তালিকায় এই প্রাণীটিকে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ঠিক কী কারণে এতগুলো পাইলট তিমি একসঙ্গে সমুদ্রসৈকতের দিকে এল— তা এখনও স্পষ্ট নয়। অস্ট্রেলিয়ার তিমি গবেষক ভেনেসা পিরোটা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘সম্ভবত এরা হাঙ্গর, খুনী তিমি (কিলার হোয়েল) বা এই জাতীয় কোনো শিকারী প্রাণীর তাড়া খেয়ে পালানোর সময়ে দিক হারিয়ে এখানে এসে আটকা পড়েছে।’

অস্ট্রেলিয়ায় অবশ্য পাইলট তিমির সমুদ্র সৈকতে আটকা পড়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া প্রদেশের সৈকতে আটকা পড়েছিল প্রায় ২০০ তিমি। সেগুলোর মধ্যে মাত্র ৩৫টিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২৬ জুলাই, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র সৈকতে ২৪ ঘণ্টায় ৫১ তিমির মৃত্যু

পোস্ট হয়েছে : ০৭:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ওয়েস্টার্নে একটি সমুদ্র সৈকতের বালিতে আটকা পড়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫১টি পাইলট তিমির মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুলাই) এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে প্রদেশের ‘পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া’ বন্যপ্রানী সুরক্ষা সংস্থার কর্মীরা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর প্রদেশের চেইনি সৈকতের বালিতে আটকা পড়ে অন্তত ৯৭টি পাইলট তিমি। দুঃখজনকভাবে রাত থেকে সকালের মধ্যে ৫১টি তিমির মৃত্যু হয়েছে। সংস্থার কর্মীদের তৎপরতায় জীবিত বাকি ৪৬টি তিমিকে গভীর সমুদ্রের দিকে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চেইনি সংকতের বেশ কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেগুলোর কোনোটিতে দেখা গেছে বেশ কিছু তিমি সৈকতের বালি ও অগভীর পানিতে আটকে পড়া অবস্থায় নিজেদের লেজ-পাখা ঝাপটাচ্ছে। কোনোটিতে ধেখা গেছে তারা সবাই জড়ো হয়ে স্থির পড়ে আছে।

পাইলট তিমি নামে তিমি হলেও এটি মূলত পরপয়েজ অর্থাৎ ডলফিন পরিবারের সদস্য। একটি পরিণত পুরুষ পাইলট তিমি দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ২০ ফুট এবং ওজনে তিন টন হতে পারে। অন্যদিকে একটি পরিণত নারী পাইলট তিমির দৈর্ঘ্য সর্বোচ্চ ১৬ ফুট এবং ওজন দেড় টন বা তার কিছু বেশি হয়।

তিমি প্রজাতির অন্য অনেক সদস্যের মতো পাইলট তিমিও শীতল পানিতে থাকতে পছন্দ করে এবং উচ্চ কম্পাঙ্কের মাধ্যমে পারস্পরিক যোগাযোগ এবং শিকারের অনুসন্ধান করে। তাদের শিকারের তালিকায় রয়েছে মাছ, স্কুইড, অক্টোপাস প্রভৃতি সামুদ্রিক প্রাণী।

এই তিমি ব্যাপকমাত্রায় সামাজিকও। এক একটি দলে ২০টি থেকে শতাধিক পর্যন্ত তিমি দেখা যায়। জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট ভিভিন্ন কারণে কমছে পাইলট তিমির সংখ্যা। বিলুপ্তির ঝুঁকির বিচারে বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত জাতিসংঘের তালিকায় এই প্রাণীটিকে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

ঠিক কী কারণে এতগুলো পাইলট তিমি একসঙ্গে সমুদ্রসৈকতের দিকে এল— তা এখনও স্পষ্ট নয়। অস্ট্রেলিয়ার তিমি গবেষক ভেনেসা পিরোটা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘সম্ভবত এরা হাঙ্গর, খুনী তিমি (কিলার হোয়েল) বা এই জাতীয় কোনো শিকারী প্রাণীর তাড়া খেয়ে পালানোর সময়ে দিক হারিয়ে এখানে এসে আটকা পড়েছে।’

অস্ট্রেলিয়ায় অবশ্য পাইলট তিমির সমুদ্র সৈকতে আটকা পড়া নতুন কোনো ঘটনা নয়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া প্রদেশের সৈকতে আটকা পড়েছিল প্রায় ২০০ তিমি। সেগুলোর মধ্যে মাত্র ৩৫টিকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২৬ জুলাই, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: