ঢাকা , সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাস্টার ফিডের মৃত পরিচালকের শেয়ার আত্মসাতের মাস্টার মাইন্ড কোম্পানির এমডি

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০২৩
  • 9

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : মাস্টার ফিড এগ্রোটেকের এক মৃত পরিচালকের শেয়ার আত্মসাতের মূল মাস্টারমাইন্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কবির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মৃত পরিচালকের স্ত্রী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পর কবির হোসেন প্রতারণার মাধ্যমে ইতিমধ্যে কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে মৃত পরিচালকের স্ত্রী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিজ লিমিটেডের সিইওর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

মাস্টার ফিডের এমডি কবির হোসেন এবিষয়ে বিজনেস আওয়ারকে বলেন, কোন প্রলোভনে উম্মে হাবিবা এসব বলছে। আগে কিন্তু এসব বলেনি। বর্তমানে কোথায় আছেন, কোন অবস্থায় রয়েছেন, জানি না। আমার ফোনও তিনি ধরছেন না। তার বাবাও ফোন ধরছেন না। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণই মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাকে নিয়ে যড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি নির্দোষ।

তিনি আরো বলেন, উম্মে হাবিবার নামে ফাস্ট ক্যাপিটালে বেনিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব করা হয়েছে। সেই বিওতে শেয়ার বিক্রি করে উনার মালিবাগ শাখার সাউথইস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে। ওই অ্যাকাউন্টের অর্থ সেই তুলতে পারবেন। সে বলতে পারবেন অর্থ কোথায় আছে। আমি বুঝিই না ওই অর্থ আমি কিভাবে আত্মসাত করবো, এখানে আমি কিভাবে জড়িত হবো, আর কিভাবেই টাকা সরাবো।

উম্মে হাবিবা বলেন, আমি বিএসইসিতে ফাস্ট ক্যাপিটালের সিইওর নামে কোন অভিযোগ দেইনি। আমার নামে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। কোম্পানির এমডি শেয়ার আত্মসাৎ করেছেন। আমার কাছে প্রমাণ আছে। তাই আমি এখন নির্দ্বিধায় বলতে পারি মাস্টার ফিডের শেয়ার বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাতের মাস্টার মাইন্ড কোম্পানির এমডি নিজেই।

অবশ্য এর আগে আরেক অভিযোগে মাস্টার ফিডের শেয়ার বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাতের মাস্টার মাইন্ড হিসেবে ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও কাউসার আল মামুনের দিকে তীর ছুড়েছিলেন। ওই অভিযোগে উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন বলেন, আমার সঙ্গে অশোভন আচরন করেছে সিইও কাওসার আল মামুন। শেয়ার বিক্রয়ের তার প্রাপ্ত অর্থ ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি, আমার পরিচয় নিয়ে সন্দেহ ও অশোভন আচরনের বিরুদ্ধে গত ২৪ জুলাই বিএসইসির চেয়ারম্যানের কাছে ওইচিঠি দিয়েছিলো। একই অভিযোগ পত্র ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কয়েকদিন পরেই অভিযোগটির তীর উল্টো দিকে আসলো।

ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও কাউসার আল মামুন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিএসইসিতে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে অভিযোগকারী উম্মে হাবিবা জানিয়েছেন তিনি অভিযোগ করেননি। তাঁর নাম ব্যবহার করে মাস্টার ফিডের এমডি কবির হোসেন চক্র এ অভিযোগ দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, উম্মে হাবিবার পাসপোর্ট, নিকাহনামা দেখে আমি তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। উম্মে হাবিবার আগের স্বামী ছিলেন মোকাদ্দেম হোসাইন। তাদের তালাকের কাগজপত্র আমরা হাতে পেয়েছি। পরবর্তীতে তিনিই মৃত রফিকুল ইসলামকে বিয়ে করেন। উম্মে হাবিবাই রফিকুল ইসলামের শেয়ারের উত্তরাধিকারী। এখন আমার দায়িত্ব হচ্ছে, প্রকৃত মালিককে শেয়ার বুঝিয়ে দেওয়া।

বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, সম্প্রতি মাস্টার ফিডের শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ বিষয়ে পৃথক চিঠি আসছে। এসব চিঠিতে একজন আরেক জনকে অভিযুক্ত করছেন। এও দেখা যাচ্ছে, একই ব্যক্তি (উম্মে হাবিবা) দুই জনের বিরুদ্ধে পৃথক সময়ে অভিযোগ করেছেন। সব কিছুই কমিশন দেখছে। হুট করে কিছু বলা যাবে না। তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। একই বিষয়ে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, অভিযোগগুলো ডিএসইতে এসেছে। আমরা আমলে নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলতে পারব।

ফাস্ট ক্যাপিটালের সিইওর কাছে দেওয়া চিঠিতে উম্মে হাবিবা বলেন, আমার স্বামী মৃত রফিকুল ইসলাম গত বছরের (২০২২ সাল) ১৫ জুলাই মৃত্যু বরণ করেন। তিনি মাস্টার ফিডের পরিচালক ছিলেন। তাঁর কাছে কোম্পানির ৭০ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার ছিল, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৯ কোটি টাকা। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আমি স্বাভাবিকভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। এমন অবস্থায় মাস্টার ফিডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কবির হোসেন ও আমার দেবর মো. তৌহিদুল আলম আমার মৃত স্বামীর কোম্পানীর কিছু কাগজপত্র আমার নামে ট্রান্সফার করতে হবে বলে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। আমি সরল বিশ্বাসে কাগজপত্রাদিতে স্বাক্ষর করে দেই। স্বাক্ষরকৃত কাগজপত্রাদি দিয়ে মো. কবির হোসেন গং ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজে একটি বিও এ্যাকাউন্ট খোলে। গত ১৬ জুলাই কবির হোসেনের সাথে ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজের মতিঝিল অফিসে গিয়ে জানতে পারি যে, আমার নামে একটি বিও এ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তখন আমি বুঝতে পারি আমার দেবর ও কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক যখন আমাকে দিয়ে মাস্টার এগ্রোটেকের অন্যান্য কাগজপত্রাদি স্বাক্ষর করিয়েছে ঠিক তখনই এই বিও হিসাবের কাগজপত্রাদিও আমাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছিল। বিও হিসাব নং: ১২০৪৪৩০০৭৫৮৭৪৯৪৯।

অভিযোগে উম্মে হাবিবা বলেন, পত্রিকা পড়ে জানতে পারি, আমার মৃত স্বামী রফিকুল আলমের নামে বরাদ্দকৃত আনুমানিক নয় কোটি টাকার শেয়ার আত্নসাতের ষড়যন্ত্র চলছে। আমি জানতে পারি যে, বিও হিসাব খোলার পূর্বে তারা আমার স্বাক্ষর জাল করে সাউথইস্ট ব্যাংকের মালিবাগ শাখায় একটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলে । পরবর্তীতে বিও এ্যাকাউন্ট ওপেন করার পর উক্ত বিও তে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৫০০টি শেয়ার ট্রান্সফার করে। শেয়ার বিক্রি করে তারা ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে যায়, যা সম্পূর্ণভাবে আমার অজানা ছিল। এখানে উল্লেখ্য যে, আমার বিও এ্যাকাউন্টের পাওয়ার অব এ্যাটর্নী হিসেবে মো. আবুল বাশার এবং নমিনী হিসেবে পেয়ার উদ্দিনকে দেখানো হয়েছে, তাদের কাউকেই আমি চিনিনা। বর্তমানে আমার বিও হিসাবে শেয়ার এবং ব্যালেন্স সহ মোট প্রায় ১ কোটি টাকা আছে।

এর আগে উম্মে হাবিবার বিরুদ্ধে বিএসইসিতে অভিযোগ দিয়েছিলেন ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও কাউসার আল মামুন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মাস্টার ফিডের এমডি একজন নারী ও কয়েকজন লোকসহ অফিসে আসেন। মুখমন্ডল ঢাকা ওই মহিলাকে উম্মে হাবিবা দাবি করেন কবির হোসাইন। বিও হিসাবে দেওয়া তাঁর (উম্মে হাবিবা) পেশা ও ঠিকানা জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে মিল নেই। এছাড়া ফার্স্ট ক্যাপিটালে দাখিলকৃত হাবিবার পাসপোর্টে তার স্বামীর নাম মো. মোকাদ্দেম হোসাইন উল্লেখ রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/ ৩১ জুলাই,২০২৩

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

মাস্টার ফিডের মৃত পরিচালকের শেয়ার আত্মসাতের মাস্টার মাইন্ড কোম্পানির এমডি

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩১ জুলাই ২০২৩

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : মাস্টার ফিড এগ্রোটেকের এক মৃত পরিচালকের শেয়ার আত্মসাতের মূল মাস্টারমাইন্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কবির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মৃত পরিচালকের স্ত্রী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পর কবির হোসেন প্রতারণার মাধ্যমে ইতিমধ্যে কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন বলে মৃত পরিচালকের স্ত্রী উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিজ লিমিটেডের সিইওর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

মাস্টার ফিডের এমডি কবির হোসেন এবিষয়ে বিজনেস আওয়ারকে বলেন, কোন প্রলোভনে উম্মে হাবিবা এসব বলছে। আগে কিন্তু এসব বলেনি। বর্তমানে কোথায় আছেন, কোন অবস্থায় রয়েছেন, জানি না। আমার ফোনও তিনি ধরছেন না। তার বাবাও ফোন ধরছেন না। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণই মিথ্যা ও বানোয়াট। আমাকে নিয়ে যড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি নির্দোষ।

তিনি আরো বলেন, উম্মে হাবিবার নামে ফাস্ট ক্যাপিটালে বেনিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব করা হয়েছে। সেই বিওতে শেয়ার বিক্রি করে উনার মালিবাগ শাখার সাউথইস্ট ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে। ওই অ্যাকাউন্টের অর্থ সেই তুলতে পারবেন। সে বলতে পারবেন অর্থ কোথায় আছে। আমি বুঝিই না ওই অর্থ আমি কিভাবে আত্মসাত করবো, এখানে আমি কিভাবে জড়িত হবো, আর কিভাবেই টাকা সরাবো।

উম্মে হাবিবা বলেন, আমি বিএসইসিতে ফাস্ট ক্যাপিটালের সিইওর নামে কোন অভিযোগ দেইনি। আমার নামে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। কোম্পানির এমডি শেয়ার আত্মসাৎ করেছেন। আমার কাছে প্রমাণ আছে। তাই আমি এখন নির্দ্বিধায় বলতে পারি মাস্টার ফিডের শেয়ার বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাতের মাস্টার মাইন্ড কোম্পানির এমডি নিজেই।

অবশ্য এর আগে আরেক অভিযোগে মাস্টার ফিডের শেয়ার বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাতের মাস্টার মাইন্ড হিসেবে ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও কাউসার আল মামুনের দিকে তীর ছুড়েছিলেন। ওই অভিযোগে উম্মে হাবিবা ইয়াসমিন বলেন, আমার সঙ্গে অশোভন আচরন করেছে সিইও কাওসার আল মামুন। শেয়ার বিক্রয়ের তার প্রাপ্ত অর্থ ফিরিয়ে দিতে অস্বীকৃতি, আমার পরিচয় নিয়ে সন্দেহ ও অশোভন আচরনের বিরুদ্ধে গত ২৪ জুলাই বিএসইসির চেয়ারম্যানের কাছে ওইচিঠি দিয়েছিলো। একই অভিযোগ পত্র ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কয়েকদিন পরেই অভিযোগটির তীর উল্টো দিকে আসলো।

ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও কাউসার আল মামুন বিজনেস আওয়ারকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে বিএসইসিতে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে অভিযোগকারী উম্মে হাবিবা জানিয়েছেন তিনি অভিযোগ করেননি। তাঁর নাম ব্যবহার করে মাস্টার ফিডের এমডি কবির হোসেন চক্র এ অভিযোগ দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, উম্মে হাবিবার পাসপোর্ট, নিকাহনামা দেখে আমি তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হয়েছি। উম্মে হাবিবার আগের স্বামী ছিলেন মোকাদ্দেম হোসাইন। তাদের তালাকের কাগজপত্র আমরা হাতে পেয়েছি। পরবর্তীতে তিনিই মৃত রফিকুল ইসলামকে বিয়ে করেন। উম্মে হাবিবাই রফিকুল ইসলামের শেয়ারের উত্তরাধিকারী। এখন আমার দায়িত্ব হচ্ছে, প্রকৃত মালিককে শেয়ার বুঝিয়ে দেওয়া।

বিএসইসির মুখপাত্র রেজাউল করিম বিজনেস আওয়ারকে বলেন, সম্প্রতি মাস্টার ফিডের শেয়ার বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ বিষয়ে পৃথক চিঠি আসছে। এসব চিঠিতে একজন আরেক জনকে অভিযুক্ত করছেন। এও দেখা যাচ্ছে, একই ব্যক্তি (উম্মে হাবিবা) দুই জনের বিরুদ্ধে পৃথক সময়ে অভিযোগ করেছেন। সব কিছুই কমিশন দেখছে। হুট করে কিছু বলা যাবে না। তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। একই বিষয়ে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, অভিযোগগুলো ডিএসইতে এসেছে। আমরা আমলে নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলতে পারব।

ফাস্ট ক্যাপিটালের সিইওর কাছে দেওয়া চিঠিতে উম্মে হাবিবা বলেন, আমার স্বামী মৃত রফিকুল ইসলাম গত বছরের (২০২২ সাল) ১৫ জুলাই মৃত্যু বরণ করেন। তিনি মাস্টার ফিডের পরিচালক ছিলেন। তাঁর কাছে কোম্পানির ৭০ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার ছিল, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৯ কোটি টাকা। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আমি স্বাভাবিকভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। এমন অবস্থায় মাস্টার ফিডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কবির হোসেন ও আমার দেবর মো. তৌহিদুল আলম আমার মৃত স্বামীর কোম্পানীর কিছু কাগজপত্র আমার নামে ট্রান্সফার করতে হবে বলে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। আমি সরল বিশ্বাসে কাগজপত্রাদিতে স্বাক্ষর করে দেই। স্বাক্ষরকৃত কাগজপত্রাদি দিয়ে মো. কবির হোসেন গং ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজে একটি বিও এ্যাকাউন্ট খোলে। গত ১৬ জুলাই কবির হোসেনের সাথে ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজের মতিঝিল অফিসে গিয়ে জানতে পারি যে, আমার নামে একটি বিও এ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তখন আমি বুঝতে পারি আমার দেবর ও কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক যখন আমাকে দিয়ে মাস্টার এগ্রোটেকের অন্যান্য কাগজপত্রাদি স্বাক্ষর করিয়েছে ঠিক তখনই এই বিও হিসাবের কাগজপত্রাদিও আমাকে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছিল। বিও হিসাব নং: ১২০৪৪৩০০৭৫৮৭৪৯৪৯।

অভিযোগে উম্মে হাবিবা বলেন, পত্রিকা পড়ে জানতে পারি, আমার মৃত স্বামী রফিকুল আলমের নামে বরাদ্দকৃত আনুমানিক নয় কোটি টাকার শেয়ার আত্নসাতের ষড়যন্ত্র চলছে। আমি জানতে পারি যে, বিও হিসাব খোলার পূর্বে তারা আমার স্বাক্ষর জাল করে সাউথইস্ট ব্যাংকের মালিবাগ শাখায় একটি ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলে । পরবর্তীতে বিও এ্যাকাউন্ট ওপেন করার পর উক্ত বিও তে ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৫০০টি শেয়ার ট্রান্সফার করে। শেয়ার বিক্রি করে তারা ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাউথ ইস্ট ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে যায়, যা সম্পূর্ণভাবে আমার অজানা ছিল। এখানে উল্লেখ্য যে, আমার বিও এ্যাকাউন্টের পাওয়ার অব এ্যাটর্নী হিসেবে মো. আবুল বাশার এবং নমিনী হিসেবে পেয়ার উদ্দিনকে দেখানো হয়েছে, তাদের কাউকেই আমি চিনিনা। বর্তমানে আমার বিও হিসাবে শেয়ার এবং ব্যালেন্স সহ মোট প্রায় ১ কোটি টাকা আছে।

এর আগে উম্মে হাবিবার বিরুদ্ধে বিএসইসিতে অভিযোগ দিয়েছিলেন ফার্স্ট ক্যাপিটালের সিইও কাউসার আল মামুন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, মাস্টার ফিডের এমডি একজন নারী ও কয়েকজন লোকসহ অফিসে আসেন। মুখমন্ডল ঢাকা ওই মহিলাকে উম্মে হাবিবা দাবি করেন কবির হোসাইন। বিও হিসাবে দেওয়া তাঁর (উম্মে হাবিবা) পেশা ও ঠিকানা জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে মিল নেই। এছাড়া ফার্স্ট ক্যাপিটালে দাখিলকৃত হাবিবার পাসপোর্টে তার স্বামীর নাম মো. মোকাদ্দেম হোসাইন উল্লেখ রয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/ ৩১ জুলাই,২০২৩

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: