ঢাকা , শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেঁয়াজ ইলিশের প্যাঁচে করোনার করণ!

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • 3

পেঁয়াজের ঝাঁজে আবার উত্তপ্ত বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়, গতবছর ঠিক এই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ টের পেয়েছিল পেঁয়াজের ঝাঁজ কতইনা উত্তপ্ত। এবার যুক্ত হয়েছে ইংলিশদের স্বাদের উৎসব, সঙ্গে তো করোনার ছোবল এখন বিদ্যমান সর্বত্রই। হঠাৎ করে আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিল, বাংলাদেশে শুরু হলো সেই পূর্বের কারসাজি ভোক্তা হুমড়ী খেয়ে পড়লো পেঁয়াজের বাজারে, মুহূর্তেই দেখা দিল সংকট দাম বৃদ্ধি পেল দ্বিগুণেরও বেশি আরেকটি অধ্যায়ঃ ঠিক যেন নতুন বোতলে পুরাতন মদ।

করোনার মহামারীতে আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, করোণায় আক্রান্ত ও মৃত্যুতে প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে ,সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা ও পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করা হল পেঁয়াজ রপ্তানি।বাংলাদেশকে দেখালো বাস্তব দর্শন কিন্তু বাংলাদেশে দেখিয়েছে বন্ধুত্বের আসল পরিচয়।সত্যিকারের বন্ধুত্ব হিসেবে পাঠানো হলো পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু ও জনপ্রিয় মাছ “ইলিশ”।

আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের কাছ থেকে বন্ধুসুলভ আচরণের দৃষ্টান্ত দেখতে পাচ্ছি না; এখনো বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যা। বাংলাদেশ মনেপ্রাণে প্রতিবেশী রাষ্ট্র টিকে সত্যিকারেই বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে। আমরা পেঁয়াজ কিন্তু দান খয়রাতি হিসেবে পাইনি কিবা চাইনি টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি। মজার ব্যাপার যেদিন ইলিশ পাঠানো হলো সেদিনই বন্ধ হল পেঁয়াজ রপ্তানি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে, তাহলে আমরা কি এক দেশকেন্দ্রিক নির্ভরতা হয়ে যাচ্ছি।

আমাদের পূর্বে অভিজ্ঞতা আছে, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল যদি ইন্ডিয়া পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে আমাদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ কি হবে? নাকি বলতে হবে, সরিষার মধ্যেই ভূত! একশ্রেণীর স্বার্থন্বেষী ব্যবসায়ী মহল সবসময়ই ওত পেতে থাকে মানুষের পকেট খালি করার জন্য সেই সুযোগটি কেন আমরা দিচ্ছি এর দায়িত্ব কে নিবে? কে দিবে এর একটি ভালো এবং স্থায়ী সমাধান?

ইলিশ নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই, পৃথিবীব্যাপী বাংলাদেশের ইলিশের সুনাম আছে, শুধু তাই না আমাদের ইলিশ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও সেরা স্বাদ এটি নিয়ে কোন বিতর্ক থাকার কথা নয়। সেই শ্রেষ্ঠ স্বাদ আমরা আমাদের প্রতিবেশীর সাথে শেয়ার না করে ভক্ষণ করিনা। বাংলাদেশের মানুষ সবসময়ই অতিথি পরায়ন এটি বাস্তবে দেখিয়ে দিয়েছে এবং এতো প্রতিকুলতার মধ্যেও দেখাচ্ছে।

যেসকল গুপ্তঘাতক পেঁয়াজ নিয়ে সিন্ডিকেট করে মানুষকে জিম্মি করে অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ব্যবসার নামে ডাকাতি করে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব হবে না। এদেশের মানুষ সকল সুযোগসন্ধানীদের হাত থেকে মুক্তি পেতে চাই।

লেখক- মোহাম্মদ সবুর মিয়া, বেসরকারি চাকরিজীবী।

বিজনেস আওয়ার/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পেঁয়াজ ইলিশের প্যাঁচে করোনার করণ!

পোস্ট হয়েছে : ০৪:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

পেঁয়াজের ঝাঁজে আবার উত্তপ্ত বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়, গতবছর ঠিক এই সময়ে বাংলাদেশের মানুষ টের পেয়েছিল পেঁয়াজের ঝাঁজ কতইনা উত্তপ্ত। এবার যুক্ত হয়েছে ইংলিশদের স্বাদের উৎসব, সঙ্গে তো করোনার ছোবল এখন বিদ্যমান সর্বত্রই। হঠাৎ করে আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিল, বাংলাদেশে শুরু হলো সেই পূর্বের কারসাজি ভোক্তা হুমড়ী খেয়ে পড়লো পেঁয়াজের বাজারে, মুহূর্তেই দেখা দিল সংকট দাম বৃদ্ধি পেল দ্বিগুণেরও বেশি আরেকটি অধ্যায়ঃ ঠিক যেন নতুন বোতলে পুরাতন মদ।

করোনার মহামারীতে আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, করোণায় আক্রান্ত ও মৃত্যুতে প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে ,সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা ও পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ করা হল পেঁয়াজ রপ্তানি।বাংলাদেশকে দেখালো বাস্তব দর্শন কিন্তু বাংলাদেশে দেখিয়েছে বন্ধুত্বের আসল পরিচয়।সত্যিকারের বন্ধুত্ব হিসেবে পাঠানো হলো পৃথিবীর সবচেয়ে সুস্বাদু ও জনপ্রিয় মাছ “ইলিশ”।

আমাদের প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের কাছ থেকে বন্ধুসুলভ আচরণের দৃষ্টান্ত দেখতে পাচ্ছি না; এখনো বন্ধ হয়নি সীমান্ত হত্যা। বাংলাদেশ মনেপ্রাণে প্রতিবেশী রাষ্ট্র টিকে সত্যিকারেই বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করেছে। আমরা পেঁয়াজ কিন্তু দান খয়রাতি হিসেবে পাইনি কিবা চাইনি টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি। মজার ব্যাপার যেদিন ইলিশ পাঠানো হলো সেদিনই বন্ধ হল পেঁয়াজ রপ্তানি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে, তাহলে আমরা কি এক দেশকেন্দ্রিক নির্ভরতা হয়ে যাচ্ছি।

আমাদের পূর্বে অভিজ্ঞতা আছে, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল যদি ইন্ডিয়া পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে আমাদের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ কি হবে? নাকি বলতে হবে, সরিষার মধ্যেই ভূত! একশ্রেণীর স্বার্থন্বেষী ব্যবসায়ী মহল সবসময়ই ওত পেতে থাকে মানুষের পকেট খালি করার জন্য সেই সুযোগটি কেন আমরা দিচ্ছি এর দায়িত্ব কে নিবে? কে দিবে এর একটি ভালো এবং স্থায়ী সমাধান?

ইলিশ নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই, পৃথিবীব্যাপী বাংলাদেশের ইলিশের সুনাম আছে, শুধু তাই না আমাদের ইলিশ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও সেরা স্বাদ এটি নিয়ে কোন বিতর্ক থাকার কথা নয়। সেই শ্রেষ্ঠ স্বাদ আমরা আমাদের প্রতিবেশীর সাথে শেয়ার না করে ভক্ষণ করিনা। বাংলাদেশের মানুষ সবসময়ই অতিথি পরায়ন এটি বাস্তবে দেখিয়ে দিয়েছে এবং এতো প্রতিকুলতার মধ্যেও দেখাচ্ছে।

যেসকল গুপ্তঘাতক পেঁয়াজ নিয়ে সিন্ডিকেট করে মানুষকে জিম্মি করে অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ব্যবসার নামে ডাকাতি করে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা না করলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব হবে না। এদেশের মানুষ সকল সুযোগসন্ধানীদের হাত থেকে মুক্তি পেতে চাই।

লেখক- মোহাম্মদ সবুর মিয়া, বেসরকারি চাকরিজীবী।

বিজনেস আওয়ার/১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: