ঢাকা , রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফ্লোর প্রাইসে বিনিয়োগকারীদের রক্ষা

  • রেজোয়ান
  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০
  • 3

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের আরোপিত ফ্লোর প্রাইসের (সর্বনিম্ন দর) কারনে রক্ষা পেয়েছে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের হাজার হাজার বিনিয়োগকারী। না হলে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার বিক্রি করে টাকা নিয়ে ভেগে যাওয়ার সহজ সুযোগ পেত ওই হাউজের মালিকেরা। একইসঙ্গে ওই নির্দেশনার কারনে রক্ষা পেয়েছে পুরো শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা। এসব কারনে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীদের কাছে। এছাড়া বিগত কমিশনের ওই পদক্ষেপটি ফলপ্রসু হওয়ায় বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনও বহাল রাখার বিষয়ে দৃঢ়।

গত ২৮ জুন ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্লোর প্রাইসের কারনে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা রক্ষা পেয়েছে বলে আলোচনা হয়। এতে বলা হয়, ভাগ্য ভালো যে ফ্লোর প্রাইস ছিল, তা না হলে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিতে পারত ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষ।

ওই ফ্লোর প্রাইসের কারনে এখনো হাউজটিতে ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর ৮২ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে। যা বর্তমানে লক-ইন করে রাখা হয়েছে। তবে গ্রাহকদের অগোচরে কি পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে, তা এখনো জানতে পারেনি শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। তবে সেটা যে খুব বেশি না, তা নিশ্চিত।

এর আগে গত ২৩ জুন থেকে বিনিয়োগকারীদের টাকা আত্মসাৎকারী ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদ উল্লাহ ব্রোকারেজ হাউজে তালা লাগিয়ে আড়ালে রয়েছেন। তবে তিনি কিছু বিনিয়োগকারীর শেয়ার বিক্রি করতে পারলেও ফ্লোর প্রাইসের কারনে অধিকাংশই রক্ষা পেয়েছে। ফ্লোর প্রাইসের কারনে ক্রেতা সংকটে তিনি সব শেয়ার বিক্রি করতে পারেননি।

ক্রেস্ট সিকিউরিটিজসহ বিভিন্ন ইস্যুতে খায়রুল হোসেন কমিশনের জারিকৃত ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনাটি বিনিয়োগকারীদের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা মনে করেন, এই নির্দেশনার কারনে এখনো তাদের পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ রয়েছে। তা না হলে নিঃশ্বেস হয়ে যেতেন। যদিও তার পেছনে যৌক্তিকের চেয়ে অযৌক্তিক কারন থাকত বেশি। তুলনামূলক অনেক শেয়ার এখনো বিনিয়োগযোগ্য এবং তলানিতে থাকায় তারা এমনটি মনে করেন।

বিএমবিএর সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হাফিজের ফেসবুক স্ট্যাটাস

এদিকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনাটি না থাকলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ মন্দাবস্থার তৈরী হতে পারত। যা ব্লকে ১০ শতাংশ কমে লেনদেনের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমেই প্রমাণিত। এই মার্কেটে ছাড় দেওয়ায় অনেক কোম্পানির শেয়ার দর ১০ শতাংশ কমে লেনদেন হচ্ছে। কিন্তু ১০ শতাংশ কমেও সাড়া জাগানো চাহিদা তৈরী হয়নি। এ হিসেবে ফ্লোর প্রাইস না থাকলে মূল্যসূচক স্বাভাবিকভাবেই প্রায় ১০ শতাংশ বা ৪০০ পয়েন্ট কমে ৩৬০০ পয়েন্টে নেমে আসবে। এরপরেও যে কত কমবে, তা এখনো বোধগম্য না। তবে পতন যে ৪০০ পয়েন্টেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, সেটা নিশ্চিত। কারন ১০ শতাংশ কমেও বিনিয়োগকারীদের চাহিদা তৈরী হয়নি।

এমন পতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরী হতো আতঙ্ক। যাতে বাড়ত বিক্রির চাপ। একইসঙ্গে মার্জিণ ঋণের কারনে শুরু হতো ফোর্সড সেল। যাতে করে সূচকের পতন কোথায় গিয়ে ঠেকত, তা উপলব্ধি করা কঠিন। এ কারনেই হয়তো বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ফ্লোর প্রাইসের ক্ষেত্রে শক্ত অবস্থানে। তিনি কোনভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পক্ষে না।

আরও পড়ুন….
কাউকে তোয়াক্কা করছে না এলআর গ্লোবাল
১১২ টাকা ইস্যু মূল্যের এমআই সিমেন্ট দেয় ১ টাকা লভ্যাংশ

কোন চাপে বা পরামর্শে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হতে পারত বর্তমান কমিশনের জন্য আত্মঘাতি। এই সিদ্ধান্ত নিলে বাজারের পতন সামলানো কমিশনের জন্য কঠিন হয়ে পড়তো। যা শেয়ারবাজারের ২০১০-১১ ইতিহাসের আরেকটি পূণরাবৃত্তি করতে পারত। যার দায় বর্তমান কমিশন কোনভাবেই এড়াতে পারতো না। যে কারনে ফ্লোর প্রাইস নিয়ে কমিশনের কেউ আগে বিরোধীতা করলেও এখন তাদের গলার সুর নরম হয়ে এসেছে। এছাড়া বিগত কমিশনের ভালোমন্দ সবকিছুতেই যেসব বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে সমালোচনা করতেন, তারাও ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনার পক্ষে।

বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে শেয়ারবাজারের সঙ্গে জড়িত কোন স্টেকহোল্ডার ফ্লোর প্রাইসের দাবি করেন না। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে ফ্লোর প্রাইস নিকট ভবিষ্যতে বা অচিরেই তুলে দেওয়া হবে বলে মনে করলেও তাদের রক্ষা করছে না বিনিয়োগকারীরা। শুধু মনে করার জন্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদেরকে তুলোধূনা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে ‘চার শতাংশ সুদে ঋণ চায় মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস’ শীর্ষক নিউজের মধ্যে ফ্লোর প্রাইস উঠানোর বিষয়ে একজন বিশ্লেষকের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এতে বিএমবিএ প্রস্তাব দিয়েছে এমন কথা বলা না হলেও বিনিয়োগকারীরা সংগঠনটির উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং নানা বাজে মন্তব্য করে। যে কারনে সংগঠনটির সভাপতি গণমাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করতে বাধ্য হয়। এ নিয়ে বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান গণমাধ্যমে বলেন, বিএমবিএ প্রস্তাব দিয়েছে এমন কথা বলা না হলেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। ওই নিউজে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট আরেকজনের ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার মন্তব্যকে অনেকে বিএমবিএ’র বলে ভুল করছেন।

তবে ফ্লোর প্রাইসের কারনে বর্তমানে লেনদেন কমে বিপদে পড়েছে ব্রোকারেজ হাউজগুলো। এতে করে ব্রোকারেজ হাউজগুলো আয় কমে গিয়েছে। এছাড়া লেনদেন ৬৬ বন্ধ থাকায় তারা আরও বেকায়দায় রয়েছে। কিন্ত ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলে, কয়েকদিন লেনদেন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে ওই কয়েকদিনে লেনদেন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ভয়াবহ পতন হবে। যাতে কয়েকদিন পরেও আবার লেনদেনে খরা তৈরী হওয়াটা স্বাভাবিক হবে। তবে আশার আলো হচ্ছে ফ্লোর প্রাইসের উপর ভিত্তি করে শেয়ারবাজার ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে ব্লকে লেনদেনের পাশাপাশি মূল মার্কেটেও বাড়তে শুরু করেছে।

বিজনেস আওয়ার/৩০ জুন, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

3 thoughts on “ফ্লোর প্রাইসে বিনিয়োগকারীদের রক্ষা

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ফ্লোর প্রাইসে বিনিয়োগকারীদের রক্ষা

পোস্ট হয়েছে : ০৪:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুন ২০২০

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশনের আরোপিত ফ্লোর প্রাইসের (সর্বনিম্ন দর) কারনে রক্ষা পেয়েছে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের হাজার হাজার বিনিয়োগকারী। না হলে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার বিক্রি করে টাকা নিয়ে ভেগে যাওয়ার সহজ সুযোগ পেত ওই হাউজের মালিকেরা। একইসঙ্গে ওই নির্দেশনার কারনে রক্ষা পেয়েছে পুরো শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা। এসব কারনে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীদের কাছে। এছাড়া বিগত কমিশনের ওই পদক্ষেপটি ফলপ্রসু হওয়ায় বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশনও বহাল রাখার বিষয়ে দৃঢ়।

গত ২৮ জুন ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ নিয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্লোর প্রাইসের কারনে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীরা রক্ষা পেয়েছে বলে আলোচনা হয়। এতে বলা হয়, ভাগ্য ভালো যে ফ্লোর প্রাইস ছিল, তা না হলে বিনিয়োগকারীদের সব শেয়ার বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিতে পারত ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষ।

ওই ফ্লোর প্রাইসের কারনে এখনো হাউজটিতে ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর ৮২ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে। যা বর্তমানে লক-ইন করে রাখা হয়েছে। তবে গ্রাহকদের অগোচরে কি পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে, তা এখনো জানতে পারেনি শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। তবে সেটা যে খুব বেশি না, তা নিশ্চিত।

এর আগে গত ২৩ জুন থেকে বিনিয়োগকারীদের টাকা আত্মসাৎকারী ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদ উল্লাহ ব্রোকারেজ হাউজে তালা লাগিয়ে আড়ালে রয়েছেন। তবে তিনি কিছু বিনিয়োগকারীর শেয়ার বিক্রি করতে পারলেও ফ্লোর প্রাইসের কারনে অধিকাংশই রক্ষা পেয়েছে। ফ্লোর প্রাইসের কারনে ক্রেতা সংকটে তিনি সব শেয়ার বিক্রি করতে পারেননি।

ক্রেস্ট সিকিউরিটিজসহ বিভিন্ন ইস্যুতে খায়রুল হোসেন কমিশনের জারিকৃত ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনাটি বিনিয়োগকারীদের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা মনে করেন, এই নির্দেশনার কারনে এখনো তাদের পোর্টফোলিওতে বিনিয়োগ রয়েছে। তা না হলে নিঃশ্বেস হয়ে যেতেন। যদিও তার পেছনে যৌক্তিকের চেয়ে অযৌক্তিক কারন থাকত বেশি। তুলনামূলক অনেক শেয়ার এখনো বিনিয়োগযোগ্য এবং তলানিতে থাকায় তারা এমনটি মনে করেন।

বিএমবিএর সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ হাফিজের ফেসবুক স্ট্যাটাস

এদিকে ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনাটি না থাকলে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ মন্দাবস্থার তৈরী হতে পারত। যা ব্লকে ১০ শতাংশ কমে লেনদেনের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমেই প্রমাণিত। এই মার্কেটে ছাড় দেওয়ায় অনেক কোম্পানির শেয়ার দর ১০ শতাংশ কমে লেনদেন হচ্ছে। কিন্তু ১০ শতাংশ কমেও সাড়া জাগানো চাহিদা তৈরী হয়নি। এ হিসেবে ফ্লোর প্রাইস না থাকলে মূল্যসূচক স্বাভাবিকভাবেই প্রায় ১০ শতাংশ বা ৪০০ পয়েন্ট কমে ৩৬০০ পয়েন্টে নেমে আসবে। এরপরেও যে কত কমবে, তা এখনো বোধগম্য না। তবে পতন যে ৪০০ পয়েন্টেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, সেটা নিশ্চিত। কারন ১০ শতাংশ কমেও বিনিয়োগকারীদের চাহিদা তৈরী হয়নি।

এমন পতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরী হতো আতঙ্ক। যাতে বাড়ত বিক্রির চাপ। একইসঙ্গে মার্জিণ ঋণের কারনে শুরু হতো ফোর্সড সেল। যাতে করে সূচকের পতন কোথায় গিয়ে ঠেকত, তা উপলব্ধি করা কঠিন। এ কারনেই হয়তো বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ফ্লোর প্রাইসের ক্ষেত্রে শক্ত অবস্থানে। তিনি কোনভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার পক্ষে না।

আরও পড়ুন….
কাউকে তোয়াক্কা করছে না এলআর গ্লোবাল
১১২ টাকা ইস্যু মূল্যের এমআই সিমেন্ট দেয় ১ টাকা লভ্যাংশ

কোন চাপে বা পরামর্শে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হতে পারত বর্তমান কমিশনের জন্য আত্মঘাতি। এই সিদ্ধান্ত নিলে বাজারের পতন সামলানো কমিশনের জন্য কঠিন হয়ে পড়তো। যা শেয়ারবাজারের ২০১০-১১ ইতিহাসের আরেকটি পূণরাবৃত্তি করতে পারত। যার দায় বর্তমান কমিশন কোনভাবেই এড়াতে পারতো না। যে কারনে ফ্লোর প্রাইস নিয়ে কমিশনের কেউ আগে বিরোধীতা করলেও এখন তাদের গলার সুর নরম হয়ে এসেছে। এছাড়া বিগত কমিশনের ভালোমন্দ সবকিছুতেই যেসব বিনিয়োগকারীরা রাস্তায় নেমে সমালোচনা করতেন, তারাও ফ্লোর প্রাইসের নির্দেশনার পক্ষে।

বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে শেয়ারবাজারের সঙ্গে জড়িত কোন স্টেকহোল্ডার ফ্লোর প্রাইসের দাবি করেন না। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে ফ্লোর প্রাইস নিকট ভবিষ্যতে বা অচিরেই তুলে দেওয়া হবে বলে মনে করলেও তাদের রক্ষা করছে না বিনিয়োগকারীরা। শুধু মনে করার জন্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদেরকে তুলোধূনা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে ‘চার শতাংশ সুদে ঋণ চায় মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউস’ শীর্ষক নিউজের মধ্যে ফ্লোর প্রাইস উঠানোর বিষয়ে একজন বিশ্লেষকের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। এতে বিএমবিএ প্রস্তাব দিয়েছে এমন কথা বলা না হলেও বিনিয়োগকারীরা সংগঠনটির উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং নানা বাজে মন্তব্য করে। যে কারনে সংগঠনটির সভাপতি গণমাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করতে বাধ্য হয়। এ নিয়ে বিএমবিএ সভাপতি ছায়েদুর রহমান গণমাধ্যমে বলেন, বিএমবিএ প্রস্তাব দিয়েছে এমন কথা বলা না হলেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। ওই নিউজে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট আরেকজনের ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়ার মন্তব্যকে অনেকে বিএমবিএ’র বলে ভুল করছেন।

তবে ফ্লোর প্রাইসের কারনে বর্তমানে লেনদেন কমে বিপদে পড়েছে ব্রোকারেজ হাউজগুলো। এতে করে ব্রোকারেজ হাউজগুলো আয় কমে গিয়েছে। এছাড়া লেনদেন ৬৬ বন্ধ থাকায় তারা আরও বেকায়দায় রয়েছে। কিন্ত ফ্লোর প্রাইস তুলে নিলে, কয়েকদিন লেনদেন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে ওই কয়েকদিনে লেনদেন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ভয়াবহ পতন হবে। যাতে কয়েকদিন পরেও আবার লেনদেনে খরা তৈরী হওয়াটা স্বাভাবিক হবে। তবে আশার আলো হচ্ছে ফ্লোর প্রাইসের উপর ভিত্তি করে শেয়ারবাজার ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরে ব্লকে লেনদেনের পাশাপাশি মূল মার্কেটেও বাড়তে শুরু করেছে।

বিজনেস আওয়ার/৩০ জুন, ২০২০/আরএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: