বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কঠোর শাস্তির হুশিয়ারীতেও ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে (সিএমএসএফ) অর্থ ও শেয়ার জমাদানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য সাড়া পাওয়া যায়নি। সিএমএসএফ এর অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ম্যানেজমেন্ট কমিটি (এএএমসি) ইস্যুয়ার কোম্পানিদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
শনিবার (১৪ মে) সিএমএসএফ এর চীফ অফ অপারেশন (সিওও) মোঃ মনোয়ার হোসেনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি জানানো হয়েছে।
অবন্টিত লভ্যাংশের অপব্যবহারকীরদের হুশিয়ারী দিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেছিলেন, চলতি মাসের মধ্যে যদি ওই লভ্যাংশের হিসাব দিতে না পারে এবং ফান্ড কোথায় রয়েছে বলতে না পারলে ও স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে স্থানান্তর না করলে, কমিশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। যা অবন্টিত লভ্যাংশের থেকে কয়েকগুণ বেশি জরিমানা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে থাকা অবণ্ঠিত লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার সিএমএসএফে আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত নগদ ৪৬০ কোটি টাকা এবং বর্তমান মার্কেট ভ্যালুতে ৩৩৮ কোটি টাকার সমপরিমাণ শেয়ার জমা হয়েছে। যা খুবই নগণ্যI এ নিয়ে নিরপেক্ষ অডিট কমিটির এক সভায় কমিটির প্রধান মোঃ আবদুর রউফ অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
আবদুর রউফ বলেন, কোম্পানিগুলোকে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত সিএমএসএফ ফান্ডে অর্থ ও শেয়ার ট্রানস্ফার করার সময় বেধেঁ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো অনেকে করেননি। এই অবস্থায় অবণ্ঠিত অর্থ ও শেয়ার এই ফান্ডে কিভাবে আনা যায়, সে বিষয়ে বিএসইসির সঙ্গে এক হয়ে মনিটরিংসহ সার্বিক তত্ত্বাবধান করা হবে। এতে অডিট কমিটির এ.কে.এম. দেলোয়ার হোসেন এবং সিএমএসএফ বোর্ড সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম.এ. মহি, শাহেদা খানম এবং মুহাম্মদ তাজদিকুল ইসলাম একমত পোষণ করেন।
আরও পড়ুন….
শেয়ারবাজারের ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা বেড়ে ৮৩৫৮ কোটি টাকা
উল্লেখ্য, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দীর্ঘদিনের অবণ্ঠিত লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। এই অর্থ একসঙ্গে করে বাজারের উন্নয়নে কাজে লাগাতে বিএসইসি ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ নামে বিশেষ এই তহবিল গঠন করেছে। সেই সঙ্গে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস, ২০২১ গ্রেজেট আকারে প্রকাশ করে। ফান্ডটির রুলস অনুসারে তা পরিচালনার জন্য ১০ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোঃ নজিবুর রহমান বর্তমানে এই ফান্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশে দেশের সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির মাধ্যমে স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। শেয়ারবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতেই এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। বাজার স্থিতিশীলতায় সিএমএসএফ “আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড” নামে একটি ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ড গঠন করেছে। এই ফান্ডের আকার ১০০ (একশত) কোটি টাকা, যার ইউনিট প্রতি অভিহিত মূল্য ১০ (দশ) টাকা। সিএমএসএফ স্পন্সর হিসেবে ৫০ (পঞ্চাশ) কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
এছাড়াও বিনিয়োগকারীদের দাবি নিষ্পত্তি এই ফান্ডের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। সিএমএসএফ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে অদ্যাবধি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২২,৯৬,৮৮০ (বাইশ লাখ ছিয়ানব্বই হাজার আটশ আশি) টাকার অমীমাংসিত দাবি নিষ্পত্তির আবেদন গ্রহণ করেছে এবং ইতোমধ্যে ২১,৩৩,২২৬ (একুশ লক্ষ তেত্রিশ হাজার দুইশত ছাব্বিশ) টাকার দাবি নিষ্পত্তি করেছে। যা মোট দাবীর ৯৩ শতাংশ।
বিজনেস আওয়ার/১৪ মে, ২০২২/আরএ