ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১১ হাজার কি:মি: সাইকেল চালিয়ে কাতারে আর্জেন্টিনার ৪ সমর্থক

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২
  • 2

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক:

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরুর আর বাকি মাত্র ৪ দিন। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ দেখতে ইতোমধ্যেই সারা বিশ্ব থেকে ভক্ত-সমর্থকরা পাড়ি দিচ্ছেন কাতারের রাজধানী দোহায়। তবে আর্জেন্টিনার চার সমর্থক যা করেছেন, তা এক কথায় পাগলামির শামিল। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে চার বন্ধু ৬ মাস সাইকেলে চালিয়ে হাজির হয়েছেন কাতারে। দূরত্বের হিসেবে যা কিনা প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার।

শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। আর্জেন্টিনার চার বন্ধু লুকাস, সিলভিও, লিয়ান্দ্রো ও মাতিয়াস মিলে এই আইডিয়া বের করেন। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে রওনা দেন তারা। বাস্তব অর্থে এত পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব না হলেও ফুটবলের প্রতি আবেগ ও ভালোবাসার কারণে এই অসাধ্য সাধন করেছেন তারা।

ঘটনার শুরু গত মে মাসে। চার বন্ধু মিলে কেপটাউন থেকে যাত্রা শুরু করে টানা ১৮০ দিন সাইকেল চালিয়েছেন। এই আর্জেন্টাইনরা প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ কি.মি পথ পাড়ি দিয়েছেন। তবে শেষ দিকে এসে বেড়ে গেছে গতিও। যার ফলে দিনে ২০০ কি.মি পর্যন্তও সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দেন তারা।

গত ছয় মাসে চার বন্ধু মিলে ২ মহাদেশের ১৩টি দেশ, ১০ হাজার কি.মি পথ পাড়ি দিয়ে কাতারে পৌঁছেছেন। যাত্রা পথে অজস্র বাধা বিপত্তি ঘটলেও বিশ্বকাপ দেখার নেশার কাছে সব পরাজিত হয়েছে। তাই দীর্ঘ সফরের ক্লান্তির চেয়ে কাতার পৌঁছে আনন্দটাই বেশি লুকাস, সিলভিও, লিয়ান্দ্রো ও মাতিয়াসের।

আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে সিলভিও বলেন, ‘সত্যি বলতে, অন্যরকম সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা হলো। অসাধারণ! কখনোই ভোলার মতো নয় এটা। ক্লান্তিকর এক সফর ছিল। আমরা অবশেষে লক্ষ্যে আমাদের পৌঁছাতে পেরেছি, তাই খুব গর্ব হচ্ছে।’

মাতিয়াস বলেন, ‘সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জটা ছিল সৌদি আরবের মরুভূমি পাড়ি দেওয়া। আমাদের ২ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। প্রতিদিন আমাদের দেড় শ কিলোমিটারের মতো সাইকেল চালাতে হয়েছে।’

চার বন্ধু একত্রে সাইকেলে চড়ে কাতার এলেও যাত্রায় তারা একা ছিলেন না। তাদেরকে পৃষ্ঠপোষক করেছিল কিছু সংস্থা। যারা এই আর্জেন্টাইন সমর্থকদের তাদের সুবিধামতো জায়গায় হোটেলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ বড় সমর্থন পেয়েছেন চার বন্ধু।

কাতারে উদ্দেশে যাত্রাপথে নানা সংস্কৃতি, ধর্ম ও গোত্রের মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন তারা। সেসব স্থানের খাবারও তাদেরকে খেতে হয়েছে। তবে দীর্ঘ ভ্রমণের কথা চিন্তা করে যাচাই-বাছাই করে খাবার খেয়েছেন তারা।

বিশ্বকাপের জন্য এত তোড়জোড় করলেও তাদের টিকিটের ব্যবস্থা এখনও হয়নি। এজন্য কর্তৃপক্ষের নিকট সহায়তার আশা করছেন এই চার বন্ধু। এখন দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত তাদের সফল যাত্রা আলোর মুখ দেখতে পারে কি না।

বিজনেস আওয়ার/১৫ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

১১ হাজার কি:মি: সাইকেল চালিয়ে কাতারে আর্জেন্টিনার ৪ সমর্থক

পোস্ট হয়েছে : ০৬:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক:

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরুর আর বাকি মাত্র ৪ দিন। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ফুটবলের এই মহাযজ্ঞ দেখতে ইতোমধ্যেই সারা বিশ্ব থেকে ভক্ত-সমর্থকরা পাড়ি দিচ্ছেন কাতারের রাজধানী দোহায়। তবে আর্জেন্টিনার চার সমর্থক যা করেছেন, তা এক কথায় পাগলামির শামিল। বিশ্বকাপকে সামনে রেখে চার বন্ধু ৬ মাস সাইকেলে চালিয়ে হাজির হয়েছেন কাতারে। দূরত্বের হিসেবে যা কিনা প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার।

শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। আর্জেন্টিনার চার বন্ধু লুকাস, সিলভিও, লিয়ান্দ্রো ও মাতিয়াস মিলে এই আইডিয়া বের করেন। পরে দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন থেকে রওনা দেন তারা। বাস্তব অর্থে এত পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব না হলেও ফুটবলের প্রতি আবেগ ও ভালোবাসার কারণে এই অসাধ্য সাধন করেছেন তারা।

ঘটনার শুরু গত মে মাসে। চার বন্ধু মিলে কেপটাউন থেকে যাত্রা শুরু করে টানা ১৮০ দিন সাইকেল চালিয়েছেন। এই আর্জেন্টাইনরা প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ১৫০ কি.মি পথ পাড়ি দিয়েছেন। তবে শেষ দিকে এসে বেড়ে গেছে গতিও। যার ফলে দিনে ২০০ কি.মি পর্যন্তও সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দেন তারা।

গত ছয় মাসে চার বন্ধু মিলে ২ মহাদেশের ১৩টি দেশ, ১০ হাজার কি.মি পথ পাড়ি দিয়ে কাতারে পৌঁছেছেন। যাত্রা পথে অজস্র বাধা বিপত্তি ঘটলেও বিশ্বকাপ দেখার নেশার কাছে সব পরাজিত হয়েছে। তাই দীর্ঘ সফরের ক্লান্তির চেয়ে কাতার পৌঁছে আনন্দটাই বেশি লুকাস, সিলভিও, লিয়ান্দ্রো ও মাতিয়াসের।

আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে সিলভিও বলেন, ‘সত্যি বলতে, অন্যরকম সুন্দর একটা অভিজ্ঞতা হলো। অসাধারণ! কখনোই ভোলার মতো নয় এটা। ক্লান্তিকর এক সফর ছিল। আমরা অবশেষে লক্ষ্যে আমাদের পৌঁছাতে পেরেছি, তাই খুব গর্ব হচ্ছে।’

মাতিয়াস বলেন, ‘সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জটা ছিল সৌদি আরবের মরুভূমি পাড়ি দেওয়া। আমাদের ২ হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। প্রতিদিন আমাদের দেড় শ কিলোমিটারের মতো সাইকেল চালাতে হয়েছে।’

চার বন্ধু একত্রে সাইকেলে চড়ে কাতার এলেও যাত্রায় তারা একা ছিলেন না। তাদেরকে পৃষ্ঠপোষক করেছিল কিছু সংস্থা। যারা এই আর্জেন্টাইন সমর্থকদের তাদের সুবিধামতো জায়গায় হোটেলের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ বড় সমর্থন পেয়েছেন চার বন্ধু।

কাতারে উদ্দেশে যাত্রাপথে নানা সংস্কৃতি, ধর্ম ও গোত্রের মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন তারা। সেসব স্থানের খাবারও তাদেরকে খেতে হয়েছে। তবে দীর্ঘ ভ্রমণের কথা চিন্তা করে যাচাই-বাছাই করে খাবার খেয়েছেন তারা।

বিশ্বকাপের জন্য এত তোড়জোড় করলেও তাদের টিকিটের ব্যবস্থা এখনও হয়নি। এজন্য কর্তৃপক্ষের নিকট সহায়তার আশা করছেন এই চার বন্ধু। এখন দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত তাদের সফল যাত্রা আলোর মুখ দেখতে পারে কি না।

বিজনেস আওয়ার/১৫ নভেম্বর, ২০২২/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: