ঢাকা , সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আরসিবিসির মামলা খারিজ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২
  • 3

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ‘মানহানির’ অভিযোগে যে মামলা করেছিল রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি), তা খারিজ করে দিয়েছেন ফিলিপিন্সের আদালত।

গত ৩০ জুন ফিলিপিন্সের আদালতে ওই রায় হয়। রায়ের নথিপত্র বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে এসেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।

এর মধ্যে একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলংকায় একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।

বাকি চারটি মেসেজের মাধ্যমে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপিন্সের মাকাতি শহরে রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে।

চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের আশায় ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়, ওই অ্যাকাউন্টগুলোর ওপর আরসিবিসি এবং এর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। কী ধরনের অপরাধ হচ্ছে জেনেও অ্যাকাউন্ট খোলা, বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তর এবং পরে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়গুলো ঘটতে দিয়েছে।

বাংলাদেশ মামলা করার দুদিনের মাথায় ৬ মার্চ ফিলিপিন্সের সিভিল কোর্টে আরসিবিসির পাল্টা ওই মানহানির মামলা করে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি পেসো (১৯ লাখ ডলার) দাবি করা হয় সেখানে।

ফিলিপিন্সের ব্যাংকটির মামলায় বলা হয়, টাকা আদায় করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বিরাট এক ষড়যন্ত্র’ শুরু করেছে, সে জন্য তারা আরসিবিসির ‘সুনাম ক্ষুণ্ন করতে, ভাবমূর্তি নষ্ট করতে’ ওঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু যে টাকার জন্য এটি তারা করছে, তা কখনই আরসিবিসির কাছে ছিল না, ওই টাকার ‘দায়ও আরসিবিসির নয়’।

আরসিবিসি মামলা করার পর আইনি লড়াইয়ের জন্য ম্যানিলার ‘বারনাস ল অফিস’কে দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ফিলিপিন্সের আদালতে আরসিবিসির পক্ষে সিদ্ধান্ত দিলে বাংলাদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করে। সেই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ জুন আরসিবিসির মানহানি মামলা খারিজ করে দেন ফিলিপাইনের আদালত।

রায়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংককে বিচারের আওতায় আনার এখতিয়ার ফিলিপিন্সের ওই আদালতের নেই। সে কারণে আরসিবিসির মামলাটি খারিজ করা হলো।

বিজনেস আওয়ার/১৪ জুলাই, ২০২২/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে আরসিবিসির মামলা খারিজ

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ‘মানহানির’ অভিযোগে যে মামলা করেছিল রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি), তা খারিজ করে দিয়েছেন ফিলিপিন্সের আদালত।

গত ৩০ জুন ফিলিপিন্সের আদালতে ওই রায় হয়। রায়ের নথিপত্র বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হাতে এসেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।

এর মধ্যে একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলংকায় একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।

বাকি চারটি মেসেজের মাধ্যমে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপিন্সের মাকাতি শহরে রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে।

চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারের আশায় ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে বলা হয়, ওই অ্যাকাউন্টগুলোর ওপর আরসিবিসি এবং এর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল। কী ধরনের অপরাধ হচ্ছে জেনেও অ্যাকাউন্ট খোলা, বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তর এবং পরে অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়গুলো ঘটতে দিয়েছে।

বাংলাদেশ মামলা করার দুদিনের মাথায় ৬ মার্চ ফিলিপিন্সের সিভিল কোর্টে আরসিবিসির পাল্টা ওই মানহানির মামলা করে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি পেসো (১৯ লাখ ডলার) দাবি করা হয় সেখানে।

ফিলিপিন্সের ব্যাংকটির মামলায় বলা হয়, টাকা আদায় করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ‘বিরাট এক ষড়যন্ত্র’ শুরু করেছে, সে জন্য তারা আরসিবিসির ‘সুনাম ক্ষুণ্ন করতে, ভাবমূর্তি নষ্ট করতে’ ওঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু যে টাকার জন্য এটি তারা করছে, তা কখনই আরসিবিসির কাছে ছিল না, ওই টাকার ‘দায়ও আরসিবিসির নয়’।

আরসিবিসি মামলা করার পর আইনি লড়াইয়ের জন্য ম্যানিলার ‘বারনাস ল অফিস’কে দায়িত্ব দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর ফিলিপিন্সের আদালতে আরসিবিসির পক্ষে সিদ্ধান্ত দিলে বাংলাদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করে। সেই ধারাবাহিকতায় গত ৩০ জুন আরসিবিসির মানহানি মামলা খারিজ করে দেন ফিলিপাইনের আদালত।

রায়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংককে বিচারের আওতায় আনার এখতিয়ার ফিলিপিন্সের ওই আদালতের নেই। সে কারণে আরসিবিসির মামলাটি খারিজ করা হলো।

বিজনেস আওয়ার/১৪ জুলাই, ২০২২/কমা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: