ঢাকা , সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কদরহীন চামড়ায় মৌসুমিদের স্থানে শিক্ষার্থীরা

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩
  • 6

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : দিনদিন কাঁচা চামড়ার কদর হারাচ্ছে। আগের মতো রাজধানীর অল্লিগলিতে এখন গরুর কাঁচা চামড়া বেচাকেনা নিয়ে নেই মাতামাতি। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নেই কোন হাঁকডাক।

ফলে অনেকেই কোরবানীর গরুর চামড়া নিয়ে পড়েছে বিপাকে। ঝামেলা এড়াতে অনেকে চামড়া দান করছে মাদ্রাসায়। দাম না পেয়ে অনেকে ফেলে দিচ্ছে। কোথাও মাটিতে পুতে ফেরার মত ঘটনা ঘটেছে।

সরকার চামড়া দাম নির্ধারন পরও ওই দামে কিনছে না ব্যবসায়ীরা। আগে যে গরুর চামড়া (মাঝারি সাইজ) দুই হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এখন সেই চামড়া তিনশ-চারশ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও এর চেয়েও কম। আবার অনেকেই বিক্রি কোথায় করবে, ঝামেলায় ফেলে দিচ্ছে। কদর না থাকায় অনেকেই এলো পাতারিভাবে চামড়া ছাড়াচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে কাঁচা চামড়া।

এদিকে “দাম না পাওয়ায় বিভিন্ন মাদ্রাসায় বিনামূল্যে চামড়া বিতরণ দিনদিন বাড়ছে। রাজধানীর অধিকাংশ মহল্লার মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য বেড়িয়ে আসে।”

একাধিক কাঁচা চামড়ার আড়তদার বলেন, পুঁজির অভাবে রাজধানীর অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী চামড়া সংগ্রহ করা ছেড়ে দিয়েছেন। শুধু রাজধানীই নয়, গ্রামগঞ্জেও চামড়া কেনা ছেড়ে দিয়েছেন তারা। মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের সেই জায়গায় এখন বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা দখল করেছে।

বুঝে-শুনে কাঁচা চামড়া কেনার পরামর্শ দেন পুরান ঢাকার পোস্তার কাঁচা চামড়ার আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিনস মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. টিপু সুলতান। তিনি বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া লবণযুক্ত চামড়া দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কেনা ঠিক হবে না।

আরও বলেন, তারা (ব্যবসায়ীরা) যেন অবশ্যই এর চেয়ে কম রেটে কাঁচা চামড়া কিনেন। করণ মাঝারি আকারের একটি গরুর চামড়া সংরক্ষণে প্রায় ৯ কেজি লবণ লাগে। এর সঙ্গে শ্রমিকদের মজুরি ও গোডাউন ভাড়া আছে।

বৃষ্টিতে চামড়া নষ্ট হতে পারে এমন আশঙ্কা করে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ বলেন, বৃষ্টির কারণে ৫ থেকে ১০ শতাংশ চামড়া অবশ্যই নষ্ট হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যবসায়ীরা চামড়াগুলো সঠিক সময়ে সংরক্ষণ না করলে সেখানেও চামড়া নষ্টের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির কারণে চামড়ার মান দ্রুত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রাত ১০টার মধ্যে বেচাকেনা শেষ করে তা সংরক্ষণ করার আহ্বান জানান তিনি।

বিজনেস আওয়ার/৩০ জুন, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

কদরহীন চামড়ায় মৌসুমিদের স্থানে শিক্ষার্থীরা

পোস্ট হয়েছে : ০১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩

মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান : দিনদিন কাঁচা চামড়ার কদর হারাচ্ছে। আগের মতো রাজধানীর অল্লিগলিতে এখন গরুর কাঁচা চামড়া বেচাকেনা নিয়ে নেই মাতামাতি। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নেই কোন হাঁকডাক।

ফলে অনেকেই কোরবানীর গরুর চামড়া নিয়ে পড়েছে বিপাকে। ঝামেলা এড়াতে অনেকে চামড়া দান করছে মাদ্রাসায়। দাম না পেয়ে অনেকে ফেলে দিচ্ছে। কোথাও মাটিতে পুতে ফেরার মত ঘটনা ঘটেছে।

সরকার চামড়া দাম নির্ধারন পরও ওই দামে কিনছে না ব্যবসায়ীরা। আগে যে গরুর চামড়া (মাঝারি সাইজ) দুই হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এখন সেই চামড়া তিনশ-চারশ টাকার নিচে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও এর চেয়েও কম। আবার অনেকেই বিক্রি কোথায় করবে, ঝামেলায় ফেলে দিচ্ছে। কদর না থাকায় অনেকেই এলো পাতারিভাবে চামড়া ছাড়াচ্ছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে কাঁচা চামড়া।

এদিকে “দাম না পাওয়ায় বিভিন্ন মাদ্রাসায় বিনামূল্যে চামড়া বিতরণ দিনদিন বাড়ছে। রাজধানীর অধিকাংশ মহল্লার মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য বেড়িয়ে আসে।”

একাধিক কাঁচা চামড়ার আড়তদার বলেন, পুঁজির অভাবে রাজধানীর অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী চামড়া সংগ্রহ করা ছেড়ে দিয়েছেন। শুধু রাজধানীই নয়, গ্রামগঞ্জেও চামড়া কেনা ছেড়ে দিয়েছেন তারা। মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের সেই জায়গায় এখন বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা দখল করেছে।

বুঝে-শুনে কাঁচা চামড়া কেনার পরামর্শ দেন পুরান ঢাকার পোস্তার কাঁচা চামড়ার আড়তদারদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিনস মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. টিপু সুলতান। তিনি বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া লবণযুক্ত চামড়া দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কেনা ঠিক হবে না।

আরও বলেন, তারা (ব্যবসায়ীরা) যেন অবশ্যই এর চেয়ে কম রেটে কাঁচা চামড়া কিনেন। করণ মাঝারি আকারের একটি গরুর চামড়া সংরক্ষণে প্রায় ৯ কেজি লবণ লাগে। এর সঙ্গে শ্রমিকদের মজুরি ও গোডাউন ভাড়া আছে।

বৃষ্টিতে চামড়া নষ্ট হতে পারে এমন আশঙ্কা করে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ বলেন, বৃষ্টির কারণে ৫ থেকে ১০ শতাংশ চামড়া অবশ্যই নষ্ট হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যবসায়ীরা চামড়াগুলো সঠিক সময়ে সংরক্ষণ না করলে সেখানেও চামড়া নষ্টের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির কারণে চামড়ার মান দ্রুত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রাত ১০টার মধ্যে বেচাকেনা শেষ করে তা সংরক্ষণ করার আহ্বান জানান তিনি।

বিজনেস আওয়ার/৩০ জুন, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: